যশোরে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাচনে নানা অসঙ্গতির অভিযোগ
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মিঠুর সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ রেড ক্রিকেট সোসাইটি যশোর ইউনিটের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির নাম থাকাসহ নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আসাদুজামান মিঠু। আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকালে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে মিঠু বলেন, রেড ক্রিসেন্ট মূলনীতি হিসেবে মানবতা, পক্ষপাতহীনতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, স্বেচ্ছামূলক, সেবা, একতা ও সার্বজনীনতা। অথচ যশোর রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের নির্বাহী নেতৃত্বের দ্বারা এসব মূলনীতি পদদলিত করা হয়েছে।
নামকাওয়াস্তে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলেও মূলত নির্বাচনের কথা কেউ জানতেও পারতেন না, যদি আমি শেষ মুহূর্তে প্রার্থী না হতাম। কারণ, রাতের আধারে কমিটিকে নিজের পকেটে ভরার সকল আয়োজন অতি গোপনে সম্পন্ন করা হয়েছিল। ২৪ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যশোর আগমন ঘিরে যখন প্রশাসন, রাজনৈতিক অঙ্গন, মিডিয়া তথা গোটা যশোর তুমুল ব্যস্ত সময় পার করছে তখনই তফসিল ঘোষণা করা হয়। অবাক করার বিষয় ১৫ নভেম্বর ঘোষিত নির্বাচনী তফসিলে চিঠি ডাকযোগে পাঠানো হয় ২২ নভেম্বর। আরও অবাক করার বিষয় হচ্ছে ডাকযোগে পাঠানো খামে ছিল না কোনো চিঠি। আমার ধারণা আমার মতো অনেকে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যশোর ইউনিটের নির্বাচন নিয়ে কি নোংরা খেলা হয়েছে তা কল্পনা করার মতো না। ভোটার তালিকা দীর্ঘ দেখাতে গিয়ে বেশ কয়েকজনকে সম্মানিত মৃত ব্যক্তিকে ভোটার দেখানো হয়েছে। সাবেক এমপি শাহ হাদীজ্জামান (১০৯), সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট খাঁন টিপু সুলতান (১৫৫), অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুস শহীদ লাল (৬৭), আলী আকবর, রমেন্দ্রনাথ মন্ডলসহ অন্তত পঞ্চাশজন মৃত ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় রাখা হয়েছে। এধরনের ধৃষ্টতা ইতিপূর্বে যশোরের কোনো প্রতিষ্ঠানের কখনও দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, এই ডিজিটাল যুগেও রেড ক্রিসেন্টের মতো প্রতিষ্ঠানে কোনো ভোটার তালিকায় কোনো ভোটারের মোবাইল কিংবা টেফিফোন রাখা হয়নি। অধিকাংশ ঠিকানা সঠিকভাবে লেখা নেই। এমনকি দুইজন ভোটারের মুসলিম হলেও তাদের পিতার নাম হিন্দু দেখানো হয়েছে। এ ধরনের হাজারো অসঙ্গতি অন্যায় অবিচার আর অনিয়মকে পূঁজি করেই ব্যক্তি বিশেষ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে দীর্ঘদিন ধরে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পরিচালনা করছেন। এসব অনিয়ম, অসঙ্গতি দূর হওয়া দরকার বলে দাবি করেন।
ভোটের চারদিন বাকি থাকায় আর ভোটার তালিকায় সঠিক ব্যক্তির নাম ঠিকানা থাকায় ৭০০ ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না জানান মিঠুন। সকলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন এই রাজনৈতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। মনোনয়নপত্র কিনতেও বাধা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, ৭টি পদের বিপরীতে মাত্র ৮টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হয়েছে। নিজেদের পছন্দের বাইরে কাউকে মনোনয়নপত্র কিনতে দেয়া হয়নি। আমি বিভিন্ন কৌশল করে মনোনয়নপত্র কিনেছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিকেট সোসাইটি যশোর ইউনিটের জীবন সদস্য এজেডএম সালেক, আক্তার জাহিদ শাহিন, জবেন আলী, খলিলুর রহমান, কাজী সাদাব হাসান শাহারিয়ার প্রমুখ।
অভিযোগ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ইয়াকুব কবির বলেন, গঠনতন্ত্র মেনেই তফশীল ঘোষণা করা হয়েছো। কোনো অনিয়ম হয়নি। ভোটার তালিকায় আপত্তি জানানোর সুযোগ ছিল। তখন কেউ আপত্তি দেয়নি। আর তালিকা তো নির্বাচন কমিশন করে না। এটা পূর্বের কমিটি করে থাকে।