অভয়নগর প্রতিনিধি :
যশোরের অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সরকারি পরিত্যাক্ত কোয়ার্টারসহ ডককে পতিত জমি দেখিয়ে এবং রেলওয়ের জায়গায় অর্ধশত বছরের গণকবরকে কৃষিজমি দেখিয়ে লিজ দেয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে চেঙ্গুটিয়া বাজারে এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে রেলওয়ের ডক ও গণকবরের ইজারা বাতিল, ভুক্তভোগীদের উচ্ছেদের চক্রান্তসহ তাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় বৃহৎ কর্মসূচির মাধ্যমে যশোর-খুলনা মহাসড়ক, রেল অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেয়া হয়। একইসাথে গণকবর ও ডকের তথ্য গোপন করে লিজ গ্রহিতাদেরও সতর্ক করা হয়।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রেলওয়ের ডক পরিত্যক্ত জমি দেখিয়ে রেলওয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মচারীর ছেলেকে লিজ দিয়েছে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। লিজ গ্রহণের পর থেকে ওই ডকে তিন প্রজন্ম থেকে বসবাস করে আসা রেলওয়ের মৃত ভ‚মিহীন কর্মচারীর পরিবারসহ বসবাসরত ৭টি ভ‚মিহীন পরিবারকে লিজ গ্রহিতা জনৈক মিরাজ উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে তিনি ওই পরিবারগুলোর সদস্যদের নামে থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির করার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া বিগত প্রায় অর্ধশত বছর থেকে গড়ে ওঠা চেঙ্গুটিয়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন একটি গণকবর কৃষিজমি দেখিয়ে ওই এলাকার আরেক ব্যবসায়ী লিজ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মানববন্ধনের বক্তারা। তাদের অভিযোগ, ওই গণকবর লিজ নেয়ার পর তিনি স্কেভেটর দিয়ে কবরের মাটি কেটে সেখানে কৃষিকাজ শুরু করেছেন। বক্তারা বলেন, গণকবরের মাটি কেটে সরিয়ে ফেলার সময় স্কেভেটরে মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড় উঠে আসলে চালক মাটি কাটা বন্ধ করে দেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, সর্বশেষ ওই ডকে বসবাসরত ভূমিহীন মিনা বেগম ও মামুনের পিতা মারা গেলে ওই গণকবরে লাশ দাফনেও বাঁধা প্রদান করা হয়। পরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে পিছু হটেন লিজ গ্রহিতা মাসুদ পারভেজ মুসা।
বিক্ষোভ সমাবেশে চেঙ্গুটিয়া রথখোলা পূজা মন্দিরের সভাপতি মন্টু ঘোষ, ইসলামি আন্দোলন যশোর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম মহসিন শেখ, চেঙ্গুটিয়া বিসিসি মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি আলী হোসেন, চেঙ্গুটিয়া বাজার কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামির আলী মোল্যা, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রেলওয়ের মৃত কর্মচারী শাহাজান মোল্যার স্ত্রী শাহিদা বেগম স্বামী পরিত্যাক্তা ভ‚মিহীন মিনা বেগম ও তার ভাই মামুন বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে লিজ গ্রহিতা কর্তৃক দেয়া বেঁড়া উপড়ে ফেলে উত্তেজিত জনতা।