Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে ‘মুখচেনা আর আজ্ঞাবহ’দের নিয়ে জেলা সাহিত্য মেলা উদযাপনের প্রস্তুতি!

0

প্রতিবেদক :
যশোরে ‘মুখচেনা আর আজ্ঞাবহ’দের নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দু’দিনব্যাপি জেলা সাহিত্য মেলা। বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২১ ও ২২ ডিসেম্বর) এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। অথচ জেলার অনেক কবি-সাহিত্যিক এই মেলার খবর জানেন না। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় কমিটি নিজেদের খেয়ালখুশিতে ও পছন্দের লেখকদের নিয়ে মেলার এ আয়োজন চলছে। এদিকে, লেখা নিয়ে সংকলন প্রকাশের কথা থাকলেও এ সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি।

যশোর জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যশোর টাউনহল ময়দানে দুই দিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলা আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে আছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক হোসেন উদ্দিন হোসেনও। অন্যান্যের মধ্যে আছেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ড. সবুজ শামিম আহসান, ড. শাহানাজ পারভীন ও গোলাম মোস্তফা মুন্না।

অভিযোগে জানা গেছে, মেলাতে অংশগ্রহণের জন্য এই জেলার কবি-সাহিত্যিকদের ফরম পূরণ করতে হচ্ছে। কিন্তু অনেক লেখক, কবি, সাহিত্যিক এই ফরমের কথা জানেন না। ‘মুখচেনা, আজ্ঞাবহ ও ঘনিষ্ঠদের’ এই ফরম প্রদান করা হয়েছে। পছন্দের বাইরে কাউকে ফরমের কথা বলা হয়নি। অন্যদিকে, যশোর জেলার ওপরে প্রবন্ধ পাঠ ও সংকলন প্রকাশের কথা থাকলেও করা হয়নি লেখা আহ্বান।

‘আমি তো বাড়ি বাড়ি যেয়ে সবাইকে জানাতে পারবো না।

সভা করে কমিটি করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে ফরম আছে।

উপজেলাগুলোতে ফরম পাঠানো হয়েছে।

যারা আগ্রহী তারা জেনেছেন এবং ফরম পূরণ করছেন।’

-মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)

আহ্বায়ক, জেলা সাহিত্য মেলা কমিটি

কবি তহীদ মনি বলেন, যশোরের কবি-সাহিত্যিকরা অধিকাংশই জানেন না কারা কিভাবে এই মেলায় যুক্ত হয়েছে বা হচ্ছে। আসলে কোনো বাছাই প্রক্রিয়াই হয়নি। মুখচেনা, ঘনিষ্ঠ আর আজ্ঞাবহদের যুক্ত করে এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এতে প্রকৃতই যারা লেখালেখির সাথে যুক্ত তাদের অবমাননা করা হয়েছে।

কবি ও লেখক সৈয়দ আহসান কবীর বলেন, ‘যশোরে সাহিত্য মেলার বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে প্রত্যেকটি জেলায় হবে, কোনো কোনো জেলায় হয়েছে বলে জানি। যশোরে মেলা উপলক্ষে লেখা আহ্বানও করতে শুনিনি বা দেখিনি। আমার মতো স্থানীয় অনেক কবি ও সাহিত্যকই জানতে পারেননি বলে আজ শুনলাম।’

কবি আরশি গাইন বলেন, ‘যশোর জেলার কবি-সাহিত্যিদের লেখা নিয়ে সংকলনের বিষয়ে আপনি প্রশ্ন করলেন বলে জানতে পারলাম। আমি কয়েকদিন আগে মেলা সম্বন্ধে জেনেছি। সেটি কমিটির কারও কাছ থেকে না বা তারা জানাতে বলেছে বলে জেনেছি, সেরকমও না।’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কবি ও লেখকের অভিযোগ, যশোর জেলা সাহিত্য মেলার স্থানীয় কমিটি নিজেরা নিজেদের পছন্দের লেখক-সাহিত্যিক নিয়ে করতে যাচ্ছে। সংকলনে লেখা তারাই লিখছে।

কবি ও অণুগল্পকার মামুন আজাদ বলেন, ‘কয়েকদিন আগে যশোরে বইমেলায় ছিলাম। সেখান থেকে আমার কয়েকজন বন্ধু কবির কাছ থেকে সাহিত্য মেলার বিষয়ে জানতে পারি। সংকলন বের হবে কি না জানি না।’

এ ব্যাপারে কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি তো বাড়ি বাড়ি যেয়ে সবাইকে জানাতে পারবো না। সভা করে কমিটি করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে ফরম আছে। উপজেলাগুলোতে ফরম পাঠানো হয়েছে। যারা আগ্রহী তারা জেনেছেন এবং ফরম পূরণ করছেন।’

বাংলা একাডেমির জেলা সাহিত্য মেলার সম্বয়কারী সাইমন জাকারিয়া বলেন, জেলা সাহিত্য মেলা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। জেলার সংশ্লিষ্টরাই সব আয়োজন করছেন। বাংলা একাডেমি শুধু সমন্বয় করছে।

যশোরের সাহিত্যসংশ্লিষ্ট অনেকেই এই মেলার খবর জানেন না, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যশোর সাহিত্য সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানে সাহিত্যসংশ্লিষ্ট অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষ রয়েছেন। তাদের সবাইকে নিয়েই মেলাটি হওয়া দরকার।

তবে লিখিত কোনো অভিযোগ তিনি পাননি উল্লেখ করে বলেন, মৌখিকভাবে এটি শুনেছেন। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দিয়ে সবাইকে সাথে নিয়ে মেলাটি উদযাপনের জন্য সংশ্লিষ্টদের তিনি বলবেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.