Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ইরফান হত্যায় জড়িতরা চিহ্নিত হয়নি

প্রতিবাদে মানববন্ধন স্মারকলিপি

0

প্রতিবেদক :
যশোরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ইরফান ফারাজী (২৬) হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীরা চিহ্নিত হয়নি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটার চারদিন পার হলেও সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, খুনিদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে। হত্যাকান্ডের সময়ে একটি সিসিক্যামেরা ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দোষীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

এদিকে, ইরফান ফারাজী হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে মানববন্ধন-বিক্ষোভ মিছিল ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কাউন্সিলর রাজিবুল আলমের নেতৃত্বে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের সহস্রাধিক মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

গত ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের কারবালা ধোপাপাড়া এলাকায় দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে ইরফান ফারাজী (২৬) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত ইরফান ফারাজী শহরের কারবালা ধোপাপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলাম ফারাজীর ছেলে। তিনি খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ডিপ্লোমা করে চাকরিপ্রত্যাশী ছিলেন। চাকরি না পেয়ে স্থানীয় ফারাজি স্টোর নামে একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করছিলেন তিনি। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিনও বিকালে ইরফান দোকানে বসেন। সেখানেই তিনি হত্যার শিকার হন। এই ঘটনায় ইরফান ফারাজির বড়ভাই ইমরান ফারাজি শুক্রবার গভীররাতে ৫ থেকে ৬ জনকে অজ্ঞাত করে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার এজাহারে ইমরান ফারাজি উলে¬খ করেন, ঘটনার দিন বিকাল ৪টার দিকে পার্শ্ববর্তী দোকানদার আজিজ উদ্দিনসহ অন্যদের মুখে সংবাদ পান বিকাল পৌনে ৪টার দিকে অজ্ঞাত ৪-৫ জন দোকানে এসে চিপস ক্রয়ের কথা বলে। ইরফান চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালে কোনোকিছু বুঝে উঠার আগে তার বুকের বামপাশে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়। ইরফান বুক চেপে ধরে বাইরে এসে ধর ধর করে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা চাকু হাতে নিয়ে উত্তরদিকে কারবালা কবরস্থানের পাশ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। লোকজন ঘটনাস্থলে যেয়ে ইরফানকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করে।

এদিকে, ইরফান ফারাজী হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর রাজিবুল আলমের নেতৃত্বে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের সহস্রাধিক মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘ইরফান ফরাজী এলাকায় ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত। জানা মতে তার সাথে কারো কোন শত্রæতা নেই। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে তার পিতার দোকানে ঢুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায়। জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। অথচ ঘটনার পর ৫ দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এ অবস্থায় জড়িতদের দ্রুত আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিলসহকারে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান এলাকাবাসী। পরে পুলিশ সুপার বরাবর হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আসামি এখনও আটক হয়নি। সিসিটিভির ফুটেজ ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আসামি আত্মগোপনে চলে গেছেন। কি কারণে ইরফান ফারাজি হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন সেটা এখনও জানা যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকেও হত্যাকান্ডের কোনো ক্লু দিতে পারছে না। তবে ধারণা করছি দোকানে বেচাকেনা নিয়ে কারও সাথে কথা কাটাকাটি, মেয়েলি কোনো ঘটনা বা খুলনায় লেখাপড়া করাকালীন কারও সাথে কোনো শত্রুতার সূত্র ধরে ইরফানকে হত্যা করা হতে পারে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.