Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে জখমী সনদ প্রদানে লাখ টাকা উৎকোচ দাবি!

২৫০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মুরসালিনুরসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

0

প্রতিবেদক :
জখমী সনদ প্রদানে লাখ টাকা উৎকোচ দাবি ও টাকা না দেয়ায় মিথ্যা জখমী সনদ প্রদানের অভিযোগে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মুরসালিনুর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে মিলন মাহামুদ। এরআগে একই বিষয়ে দুদকে অভিযোগ করেন তিনি। অন্য আসামিরা হলেন : ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত কেনায়েত আলীর ছেলে মো. রফিক, একই গ্রামের মৃত নুর ইসলামের ছেলে সেলিম রেজা, নওশের আলীর ছেলে লাবু, মৃত ওয়াজেদ সরদারের ছেলে নূর ইসলাম ফকির, মৃত জালাল সরদারের ছেলে মুনতাজ, আকছেদ আলীর ছেলে কবির হোসেন, মৃত হানিফের ছেলে পলাশ, সাইফুল ইসলামের ছেলে মিঠু। আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবির উদ্দিন প্রামানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের কাছে দেয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী ফরিদুল ইসলাম।

মামলায় বাদী মিলন উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বাদীর ভাই জাকির হোসেন পিপুল চেয়ারম্যান পদে অংশ নেন। তার ভাইয়ের প্রচারণার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর মিলনসহ ৩০-৩৫ জন কর্মী মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার বেজিয়াতলা মালোপাড়া মোড়ে পৌছালে ডা. মুরসালিন ছাড়া অন্য আসামিরাসহ অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা হাসুয়া ও গাছিদা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় মিলনের সাথে থাকা মাহাবুবুর রহমান বুড়ো, হাসেম আলী, মিলন, সিরাজুল ইসলামের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। হামলায় বুড়োর পিঠে কোপ মারে আসামি রফিক। ক্ষতস্থানে তার ১০টি সেলাই দেয়া হয়। এছাড়া আসামি মুনতাজের কোপে বুড়োর বাম কিডনিতে মারাত্মক ক্ষত হয়। সেখানে ১২টি সেলাই দেয়া হয়। এছাড়া বাদীর সাথে থাকা হাশেমের ডান উড়–তে মারাত্মক জখম হয়। সেখানে ৭টি সেলাই দেয়া হয়। আরেক সঙ্গি মিলনের গলায়, কানে , উড়–তে কোপ মারে আসামিরা। তার শরীরে মোট ১৫টি সেলাই দেয়া হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় বাদী ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর ডাক্তার ব্যতিত অন্য আসামিদেরসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন। ওই মামলার জখমীদের চিকিৎসা সনদ সংগ্রহ করতে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি বাদী ডা. মুরসালিনুর রহমানের কাছে যান। এ সময় সঠিক জখমীসনদ দেয়ার জন্য একলাখ টাকা উৎকোচ দাবি করে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমান। অন্যথায় সামান্য জখম হয়েছে উল্লেখ করে সনদ দেয়া হবে বলে জানান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে মেডিকেল সার্টিফিকেট তলব করেন। তার প্রেক্ষিতে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমান মাহাবুবুর রহমান, হাসেম আলী ও মিলনের ধারালো অস্ত্রের গুরুতর জখম থাকা সত্ত্বেও ভোতা অস্ত্রের সামান্য জখম উল্লেখ করে জখমী সনদ প্রদান করেন। বাদীর দাবি ডাক্তার মুরসালিনুর রহমানের দাবিকৃত উৎকোচ না দেয়ায় অন্য আসামিদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে এ ধরণের মিথ্যা ও ভুয়া জখমী সনদ প্রদান করেছেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, জখমী সনদে মিথ্যা তথ্য দেয়ায় বাধ্য হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে গুরুতর ধারার পরিবর্তে সাধারণ ধারার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করেছেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, একই মামলায় বাদীর চাচা সিরাজুল ইসলামের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাতের আঙ্গুল কেটে পরে যায়। অথচ ডাক্তার তার ক্ষেত্রেও নরমাল আঘাত ও ভোতা অস্ত্রের আঘাতের ক্ষত উল্লেখ করা হয়। একপর্যায়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমান সেটা সংশোধন করে ধারালো অস্ত্রের কথা উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে প্রথমে তারা দুদকের কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বাদী এবার আদালতে মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার যেটা করেছেন সেটা অবশ্যই অমানবিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার অপরাধ দৃশ্যমান। যা তিনি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রথমে বাদী দুদকের কাছে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত দুদকের পক্ষ থেকে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। আগামি ২৫ ফেব্রæয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.