Take a fresh look at your lifestyle.

মায়ের ইচ্ছা পূরণে ছেলেকে পালকিতে বিয়ে দিলেন গণেশ মন্ডল

0

প্রতিবেদক :
বাঙালি সংস্কৃতিতে পালকি একসময় খুবই জনপ্রিয় বাহন ছিল। বিয়েসাদি বা রাজা-জমিদাররা কোথাও গেলে বাহন হিসাবে পালকি ব্যবহার করতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে পালকি। ডিজিটাল যুগের ছেলে-মেয়েদের পালকি দেখেনি অনেকেই। তাই পালকিতে বিয়ে করতে যাবে শুনে রাস্তার পাশে অধির আগ্রহে বসে ছিল শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ। পালকিতে বিয়ে করতে যেয়ে এলাকায় রীতিমত আড়োলন সৃষ্টি করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত অনুপ কুমার মন্ডল। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের গণেশ কুমার মন্ডলের মেজ ছেলে।

পালকিতে চেপে বিয়ে করেছেন অনুপ কুমার মন্ডল ও মাধবী লতা রায় মীম, ছবি : কপোতাক্ষ

সূত্র জানায়, উপজেলার সাদিপুর গ্রামের গণেশ কুমার মন্ডলের মেজ ছেলে অনুপ কুমার মন্ডলের সাথে হাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের হিরেন্দ্রনাথ রায়ের বড় মেয়ে মাধবী লতা রায় মীমের বিয়ে ঠিক হয়। পরিবারিকভাবে শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে তাদের বিয়ে হয়। বাঙালির প্রাচীন সংস্কৃতির পালকিতে বিয়ে করতে যেয়ে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে এলাকায়। পালকিতে বর, পায়ে হেঁটে বরযাত্রী পটকাবাজি, আতশবাজি ও ব্যান্ডদল নিয়ে বাজনা বাজাতে বাজাতে বিয়ে করতে যান তারা। এসময় গ্রামের শিশু থেকে শুরু সর্বস্তরের নারীপুরুষ রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে তাদের পালকিতে যাওয়ার দৃশ্য উপভোগ করে। তারা সাদিপুর থেকে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে সোনাকুড় কনের বাড়িতে যায় এবং শনিবার ফেরার সময় সোনাকুড় দক্ষিণপাড়া ও হাজিরবাগের মধ্য দিয়ে সাদিপুর ফিরে আসে। দীর্ঘদিন পর পালকিতে বিয়ে করতে যাওয়া দেখে এলাকার মানুষ খুবই মজা পেয়েছে। শিশুরা পালকির সাথে সাথে অনেক দুর পর্যন্ত আনন্দ করতে গিয়েছে। দুদিন পালকির বিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে।

নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ফাহিম ও মাহিম নামের দুই শিশু জানায়, আমরা জীবনেও পালকি দেখিনি। পালকিতে বিয়ে করতে যাওয়া দেখে খুব মজা পেয়েছি।

পালকিতে বিয়ে করা অনুপ-মাধবী দম্পতি, ছবি : কপোতাক্ষ

বরের পিতা গণেশ কুমার মন্ডল জানান, আমার বাবা-মায়ের বিয়ে হয়েছিল পালকিতে। তাই আমার মায়ের ইচ্ছা তার যেকোনো পোতা ছেলে পালকিতে বিয়ে করতে যাবে এবং নাতবউ পালকিতে করে আসবে। আমার মায়ের ইচ্ছার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে আমার ছেলের বিয়ের যানবাহন হিসাবে পালকি ব্যবহার করেছি।

বর অনুপ কুমার মন্ডল জানান, আমার ঠাকুরমার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়েতে পালকি ব্যবহার করা হয়েছে। আমি খুবই আনন্দিত এবং উচ্ছ্বসিত। এই কারণে যে, প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য পালকি। ডিজিটাল যুগে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরে আমি এলাকার মানুষকে পালকি দেখাতে পেরেছি। আমি পালকিতে বসে দেখছিলাম ছোট ছোট শিশুরা পালকি দেখে খুবই আনন্দ পাচ্ছিল। প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরে আমার বিয়েতে পালকি আনাতে পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.