Take a fresh look at your lifestyle.

লাশের ময়নাতদন্তের জন্য স্বজনদের চরম দুর্ভোগ

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে

0

প্রতিবেদক :
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করতে মর্গের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তি ও অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয়না। এটা এখন প্রতিদিনের ঘটনা । এতে স্বজনরা অতিষ্ঠ হয়ে প্রায়ই চিৎকার চেঁচামেচি করেন। অথচ সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নেই বললেই চলে। গত শনিবার সকালে মর্গে ঢোকানো একটি লাশের ময়নাতদন্ত হয় বিকেলের দিকে। এজন্য চিকিৎসকের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন স্বজনেরা। হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।

সূত্র জানায়, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ৬ জন চিকিৎসক নিয়মিত লাশের ময়নাতদন্তের দায়িত্ব পালন করেন। তারা হলেন মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রশিদ, ডা. আহমেদ তারেক শামস চৌধুরী, ডা. সাইফুর রহমান, ডা. শুভাশিষ, ডা. বিচিত্র মল্লিক ও ডা. গোবিন্দ পোদ্দার। তারা প্রত্যেকে জরুরি বিভাগে রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ময়নাতদন্তের কাজ করেন। ফলে একদিনে ভর্তিতে বিলম্ব, অন্যদিকে লাশের ময়নাতদন্তের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা। এছাড়া মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বাবুল কিশোর বিশ্বাস রয়েছেন ময়নাতদন্তের দায়িত্বে।

সূত্র জানায়, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত লাশের ময়না তদন্তে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এখানে লাশের ময়নাতদন্ত হয় দুপুর ২টার পর। চিকিৎসক উপস্থিত না থাকার কারণে সঠিক সময়ে ময়নাতদন্ত হয়না। ফলে লাশ নিতে আসা স্বজনদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. আব্দুর রশিদ জানান, নিয়ম অনুযায়ী ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা লাশের ময়নাতদন্ত করবেন। কিন্তু এই নিয়মের কোনো বালাই নেই। যশোর মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক বিভাগ থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার দিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত করানো হচ্ছে। জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে লাশের ময়নাতদন্ত করা সত্যিই অনেক কষ্টের ব্যাপার। জরুরি বিভাগ মানেই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে সবসময় রোগীর চাপ থাকে। তবুও বাধ্য হয়ে এখানকার দায়িত্বের ফাঁকে তাদের ছুটতে হয় মর্গে ময়নাতদন্তের কাজে। এই সময় কোনো খারাপ রোগী ভর্তির জন্য আসলে বিপাকে পড়তে হয়।

সূত্র জানায়, গত ৩ মাস ২৮ দিনে এই মর্গে দুই শতাধিক লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। যশোর জেলার সকল উপজেলা থেকে রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার লাশগুলো এখানকার মর্গে পাঠানো হয়। যে কারণে এই হাসপাতালের মর্গের সংকট কাটাতে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ। অন্যথায় স্বজনদের দুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, লাশের ময়নাতদন্তে দুর্ভোগের বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। ময়নাতদন্ত বিভাগ বুঝে নেয়ার জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সেখানে হাসপাতাল চালু না হলে তারা ময়নাতদন্তের কাজ বুঝে নিতে চাইছেন না। ফলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এ কারণে সঠিক সময়ে তারা লাশের ময়নাতদন্ত করতে পারছেন না। এরপরও যত দ্রুত সম্ভব স্বজনদের কাছে লাশ দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.