যশোরে প্রাথমিকে বৃত্তি পেল দেড় হাজার শিক্ষার্থী
প্রতিবেদক :
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে যশোরে প্রাথমিকে এক হাজার ৫৫৮ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৫৬০ জন এবং সাধারণ গ্রেডে ৯৯৮ জন। আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধদিফতরের ওয়েবসাইট প্রকাশিত বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলে এই তথ্য জানানো হয়। করোনার কারণে গত দুই বছর শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় সারাদেশের ন্যায় যশোরেও প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ৩০০ টাকা ও সাধারণ ও সম্পূরক বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ২২৫ টাকা করে পাবে। বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তি পাবে বলে সংশ্রিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় সারাদেশের ন্যায় যশোরেও প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গেল বছরের ৩০ ডিসেম্বর একযোগে সারাদেশে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় যশোরের ৮ উপজেলায় পরীক্ষায় অংশ নেয় ৮ হাজার ৩৮৮ জন। সদরে দুই হাজার ২৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ১৫১ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১৪৫ জন। শার্শা উপজেলায় এক হাজার ৪৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৬৯ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১২১ জন। মণিরামপুর উপজেলায় এক হাজার ১৬৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৭৮ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১৫৭ জন। বাঘারপাড়া উপজেলায় ৫৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৩৯ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১০৯ জন। ঝিকরগাছা উপজেলায় এক হাজার ১০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৬৭ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১২১ জন। চৌগাছা উপজেলায় ৮৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৫৭ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১২১ জন। কেশবপুর উপজেলায় ৭৭৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৫২ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১২১ জন। অভয়নগর উপজেলায় ৬৯১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৪৭ জন আর সাধারণ গ্রেডে ১০৩ জন।
সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন, উপজেলা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যার অনুপাতে উপজেলা কোটা নির্ধারণ করে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি বণ্টন করা হয়। সাধারণ বৃত্তি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ওয়ার্ডভিত্তিক বিতরণ করা হয়। প্রথমবারের মতো পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুুসারে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা, প্রাথমিক গণিত, ইংরেজি ও প্রাথমিক বিজ্ঞান এ চারটি বিষয়ে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট নম্বর ছিল ১০০ এবং সময় ছিল ২ ঘণ্টা। বৃত্তি পাওয়া এই শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তি পাবে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ৩০০ টাকা ও সাধারণ সম্পূরক বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ২২৫ টাকা পাবে। বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বৃত্তির অর্থের পরিমাণও ২০১৫ সাল থেকে বাড়ানো হয়। আগে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পাওয়াদের মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়া হলেও ২০১৫ সাল হতে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ গ্রেডে ১৫০ টাকার পরিবর্তে ২২৫ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া উভয় ধরনের বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতিবছর ২২৫ টাকা করে এককালীন দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, দীর্ঘদিন পর বৃত্তি পরীক্ষা ও রেজাল্ট দেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উচ্ছাস ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। একইসাথে এসব শিক্ষার্থীদের মেধার মূলায়ন ও স্বীকৃতি পেল। দীর্ঘদিন পরীক্ষা না হওয়ায় সমাপণী পরীক্ষাটি গুরুত্ব পেল।