Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে জনতা ব্যাংকের লকার খুলতে গিয়ে তুলকালাম

0

প্রতিবেদক :
যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায় তাঁর স্ত্রী নিয়তি রানী রায়কে নিয়ে জনতা ব্যাংক যশোর প্রধান শাখায় যান সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে। নিয়তি রানীর নামে ভাড়া নেওয়া ব্যাংকের লকার খুলে সংরক্ষিত মালমাল নেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা ব্যাংকে যান। ব্যাংকের এজিএম রত্না চক্রবর্তী নিয়তি রানীর লকার না খুলে ‘ভুল’ করে তাদের ছেলে রাজীব রায়ের নামে ভাড়া নেওয়া লকার খুলে ফেলেন। দুটো চাবি ছাড়া লকার কথা না থাকলেও একটি চাবিতে খুলে যাওয়ায় ব্যাংকের লকারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সংসদ সদস্য।

এ নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে রণজিত রায় উত্তেজিত হয়ে ব্যাংকের এজিএম ইমরান হোসেনকে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায় ধাক্কা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাংকের লকারের নিরাপত্তা কোথায় বলে প্রশ্ন তুলেছেন।

সংসদ সদস্যের পরিবার ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের দুটি লকার ভাড়া নেওয়া আছে সদস্য সদস্য রণজিত রায়ের স্ত্রী নিয়তি রানী রায় ও ছেলে রাজীব রায়ের নামে। সোমবার দুপুরে রনজিৎ রায় তার স্ত্রী নিয়তি রায়কে নিয়ে ব্যাংকে লকার খুলতে যান। এ সময় ব্যাংকের এজিএম রত্না চক্রবর্তী সংসদ সদস্যের স্ত্রী নিয়তি রানীর লকার না খুলে তাদের ছেলে রাজীব রায়ের নামে বরাদ্দকৃত লকার খুলে ফেলেন। এ সময় ওই লকারের নিরাপত্তা নেই দাবি করে গচ্ছিত মালমাল নিজের জিম্মায় নিতে চান রনজিত রায়। ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তা এজিএম ইমরান হোসেন লিখিত দেওয়ার কথা বলেন। তখন সংসদ সদস্য খাতায় স্বাক্ষর করে নিতে বলেন। কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তারা গড়িমসি করেন। এতে সময়ক্ষেপন হওয়ায় সংসদ সদস্য উত্তেজিত হয়ে ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তা ইমরান হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে ব্যাংকের বাইরে রেবিয়ে যান। এ সময় ব্যাংকে হইচই পড়ে যায়। এরমধ্যে ব্যাংকে পুলিশ গিয়ে হাজির হয়। পরে লকারের মালিক রাজীব রায়ের মুঠোফোনে মৌখিক সম্মতিতে লকারের মালমাল সংসদ সদস্যের জিম্মায় দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংক যশোর প্রধান শাখার এজিএম ইমরান হোসেন বলেন, দুপুরে সংসদ সদস্য রনজিত রায় নিজের স্ত্রীর নামে ভাড়া করা লকার থেকে মালামাল নিতে ব্যাংকে আসেন। ব্যাংকের একজন এজিএম ভুল করে নিয়তি রানীর লকার না খুলে রাজীব রায়ের লকার খুলে ফেলেন। এ সময় রাজীব রায়ের লকারের মালামাল নিজের জিম্মায় নিতে চান সংসদ সদস্য রণজিত রায়। এ বিষয়ে লিখিত দিতে বললে তিনি ব্যাংকের শত শত লোকজনের সামনে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ব্যাংকের বাইরে বেরিয়ে যান। পরে রাজীব রায়ের সম্মতিতে তার লকারের মালামাল সংসদ সদস্যের জিম্মায় দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ব্যাংকের খুলনা বিভাগীয় জিএম সাহেবকে জানানো আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য রণজিৎ রায় বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকেই জনতা ব্যাংকে আমাদের পরিবারের নামে লকার ভাড়া নেওয়া আছে। লকার খুলতে দুইটা চাবি লাগে। একটা থাকে আমাদের কাছে অপরটি থাকে ব্যাংক কতৃপক্ষের কাছে। কিন্তু আমাদের চাবি ছাড়াই আমার ছেলের লকার ব্যাংকের কর্মকর্তা খুললেন কেমনে? লকারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করে ওই লকারের মালামাল নিতে চাইলে লিখিত দিতে বলেন। আমি বলেছি, বাঘারপাড়ায় আমার জনসভা রয়েছে, আপনারা খাতায় আমার স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেন। তাতে তারা সম্মতি না দিয়ে আমাকে আধা ঘন্টা বসিয়ে রাখে। তখন আমি রাগ করে ব্যাংকের বাইরে বেরিয়ে আসি। পরে তারা মালামালগুলো আমার জিম্মায় দেন। এ সময় ব্যাংকের কাউকে ধাক্কা দেওয়া হয়নি।’

লকারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই লকারের মালিক রাজিব রায় বলেন, ভুল করে আমার লকার খুলে ফেলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমার মায়ের লকারের চেয়ে আমার লকার তিনগুণ বড়। লকার দুটোর অবস্থানও দুই প্রান্তে। তাছাড়া আমার চাবি ছাড়াই লকার খোলা গেলে ওই লকারের নিরাপত্তা কোথায়? ওই লকারে আমার ৩০০ থেকে ৪০০ ভরি সোনা ছিল। আমি এখন বাইরে আছি। যশোরে ফিরে ওই ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। তাছাড়া আমার বাবা একজন সংসদ সদস্য। তার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.