মেহেরপুর প্রতিনিধি :
মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টিসিবি’র কার্ড জালিয়াতি হচ্ছে। টিসিবি’র স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রিকালে সরবরাহকৃত কার্ডের বিপরিতে দ্বিগুণ ক্রেতা ভিড় করায় চুক্তিবদ্ধ ডিলার জাল কার্ড শনাক্ত করে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়নে জালিয়াতি করে দ্বিগুণ করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসনের দেওয়া ১ হাজার ৩০০টি স্বল্পমূল্যের সরবরাহকরা টিসিবির কার্ডের বিপরীতে দ্বিগুণ ভোক্তা ভিড় করে। সকলের কাছেই কার্ড থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়ছেন ইউনিয়ন পরিষদ ও ডিলার উভয়ই। তাদের কার্ড জমা নিয়ে নতুন করে কার্ড সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ।
করোনাকালীন সময়ে বারাদি ইউনিয়নে প্রণোদনা ভাতাকার্ড দেয়া হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ জনকে। নতুন করে ২০৩টি অতিরিক্ত কার্ড মিলে মোট ১৫০৩টি টিসিবি কার্ড দেওয়া হয়। কার্ড প্রদানকালে বারাদি ইউনিয়নের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আপিল উদ্দিন। তার স্বাক্ষরে ঐ কার্ডগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তার স্বাক্ষরযুক্ত সিলমোহর জাল করে দ্বিগুণ কার্ড তৈরি করে একটি জালিয়াতি চক্র। কিছু কার্ডে কোনো সিলও নেই। যারা ঐ কার্ডগুলো নিয়ে পণ্য নিতে আসছেন তারা নিজেরাও কার্ডের মালিক নন। গত মঙ্গলবার যারা স্বল্পমূল্যের টিসিবি পণ্য নিতে আসেন তাদের কার্ড জমা নেয়া হয়েছে। নতুন করে তাদের কার্ড সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ। বারাদি ইউনিয়নে কার্ড জালিয়াতি ধরা পড়ার পর জেলার অপর ইউনিয়নগুলোও সতর্কতা অবলম্বন করছে।
টিসিবি ডিলার নাজমুল হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের পণ্য দিতে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। হিসাবের বাইরে অনেক মানুষ পণ্য নিতে আসায় বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানালে কার্ড জালিয়াতের বিষয়টি ধরা পড়ে। এই কারণেই কার্ডগুলো জমা নিচ্ছেন নতুন কার্ড সরবরাহের জন্য।
বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন লিটন বলেন, জালিয়াতিচক্র এসব কার্ড জাল করে মানুষের মাঝে সরবরাহ করেছে। যারা কার্ড নিয়ে পণ্য নিতে আসছেন তাদের নামের সাথে কার্ডে থাকা অনেকের নামের মিল নেই। ফলে নিশ্চিত হওয়া গেছে কার্ড কেউ জাল করে দুস্থদের মাঝে সরবরাহ করেছে। অনেক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির নামেও এসব কার্ড পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।
বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, হয়তো কোনো কম্পিউটার দোকানদাররা জাল কার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। যার ফলে ১৫০৩টি কার্ডের স্থলে অধিক কার্ডধারী ভোক্তা চলে আসছে। আমরা কার্ডগুলো জমা নিচ্ছি এবং চলতি সপ্তাহেই আগের তালিকা ধরে নতুন রঙের কার্ড সরবরাহ করবো। ঈদের আগেই টিসিবি’র কার্ডে এক কেজি ছোলা, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ডাল এবং দুই লিটার সয়াবিন তেল নিতে পারবেন ৪৭০ টাকায়।