Take a fresh look at your lifestyle.

মেহেরপুরে সহোদর হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

0

মেহেরপুর প্রতিনিধি :
মেহেরপুরে এই প্রথম হত্যা মামলায় একসাথে নয়জন আসামীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। চাঞ্চল্যকর সহোদর হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা শুনতে ভিড় জমেছিল আদালত এলাকায়। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর বর্ডার পাড়া গ্রামের চাঞ্চল্যকর সহোদর রফিকুল ইসলাম ও আবুজেল হোসেন হত্যা মামলায় এ আদেশ দেয়া হয়।

আজ রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে আব্দুল হালিম, একই গ্রামের আসের হালসানার ছেলে আতিয়ার রহমান, আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দিন, নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, দবির উদ্দিনের ছেলে শরিফ হোসেন, নবীর উদ্দিনের ছেলে দবির উদ্দিন, আফেল উদ্দিন ওরফে আফেল সরদারের ছেলে আজিজুল হক, দাবির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ হোসেন এবং মুনসুর আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম মনি। দণ্ডিতদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছে।

মেহেরপুরের ইতিহাসে এই প্রথম একসাথে

নয়জনের ফাঁসির আদেশ হলো।

-কাজী শহিদুল হক, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর

মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জুন গাংনীর কাজিপুর এলাকায় চোরাচালানীদের ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। চোরাচালান ধরিয়ে দেয়ার সাথে সম্পৃক্ততা আছে সন্দেহ করে কিয়ামুদ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলামকে (৪০)। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। ১৬ জুন সকালে ভারত সীমান্তের ১৪৫ নং/এস-৬ নং সীমানা পিলারের কাছ থেকে বাংলাদেশ অংশে ৭০-৭৫ গজ দক্ষিণে কাজিপুরের লালটুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার হয়। দুই সহোদর হত্যার ঘটনায় নিহতের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১, জি আর কেস নং ৪৩৩/১২, দায়রা নং ১১/২০১৫।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যে আসামীরা দোষি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত মামলার আদেশ প্রদান করেন।

মামলার অপর আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে অ্যাড. আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম এবং কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।

চাঞ্চল্যকর দুই ভাই হত্যার মামলার রায় ঘোষণার আগে আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বেলা ১১টার পর বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এজলাসে প্রবেশ করেন। এরপর কয়েকটি মামলার শুনানি শেষ করে চাঞ্চলকর এই হত্যা মামলার আদেশ ঘোষণা করেন। মামলার আদেশ প্রদানের আগে সব আসামীদের কাঠগড়ায় ডেকে নেওয়া হয়। আদালতে উপস্থিত আসামীদের থেকে দোষি প্রমাণিত না হওয়াদের পৃথকভাবে দাঁড় করানোর নির্দেশ দেন। এরপরপরই বিচারক বলেন, যেহেতু হত্যাটি চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা, সেহেতু সাক্ষীদের সাক্ষ্য এবং সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হলো। রায় ঘোষণার সাথে সাথে আসামীদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এসময় কড়া পুলিশ প্রহরায় দণ্ডিতদের কারাগারে নেয়া হয়।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক জানান, মেহেরপুরের ইতিহাসে এই প্রথম একসাথে নয়জনের ফাঁসির আদেশ হলো।

মামলার বাদি জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এমন আদেশ শোনার অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি অবিলম্বে এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।

আসামীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল আলম জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.