অভয়নগরে স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর অনশন!
অভয়নগর প্রতিনিধি :
যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ধোপাদী গ্রামে সবকিছু লুটে নিয়ে স্ত্রীকে স্বামীর তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্ত্রী স্বামীর বাড়ি শিশু সন্তানকে নিয়ে অনশন পালন করেছেন। আজ বুধবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্ত্রী এ অনশন পালন করেন। প্রতারক স্বামী পলাতক রয়েছে।
সূত্র জানায়, তিন বছর আগে উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ইয়াকুব আলী শেখের ছেলে মো. বুলবুল ইসলাম শেখের (৩৩) সাথে একই গ্রামের মুছা গাজীর মেয়ে জামিলা বেগমের (৩১) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। জামিলার কোলজুড়ে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সংসার বেশ ভালোই যাচ্ছিল। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর স্বামী জামিলার কাছ থেকে যৌতুক নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এর আগেও বুলবুল ইসলাম শেখের দুই স্ত্রী ছিল। তাদেরও তাড়ানো হয়েছে বলে জানা যায়। তাদের ঘরেও কন্যা সন্তান রয়েছে।
ভুক্তভোগী জামিলা কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, বুলবুল আমার স্বামী। আমার আগে তার আরও দুই স্ত্রী ছিল। আমি তা জানতাম না। প্রায় দুই বছর আগে আমাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে। বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকাসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল এনে আমার এই সংসার সাজিয়েছি। বুলবুলের সাথে সংসার করে আমার একটি কন্যা সন্তান মাবিয়ার একবছর বয়স। এই মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় যাব? সকালে আমাকে আমার ঘরে তালা মেরে বের করে দিয়ে স্বামী বুলবুল কোথায় চলে গেছে। শ্বশুর দেবর কেউ আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমি আমার অধিকারে এখানে রয়েছি। আর থাকব। তার জন্য যদি আমি মরে যাই, যাব।
বুধবার সকালে দেখা গেছে, জামিলা ও তার এক বছরের কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে আছেন। বুলবুলের বাড়ির সব ঘরে তালা ঝুলানো রয়েছে। এলাকার মানুষেরা বিষয়টি দেখতে ভিড় করছেন।
![](https://kapotakkho.com/wp-content/uploads/2023/04/dainikkapotakkho_04.4.23_bulbul.jpg)
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই বুলবুল ইসলাম একজন বিয়েপাগল প্রতারক। এর আগেও তিনি দুটি বিয়ে করে ঐ স্ত্রীদের কাছ থেকেও অর্থ আত্মসাৎ করে তাদেরও তালাক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। স্থানীয়রা বুলবুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার একাধিক বিষয় অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা জানান, বুলবুল তার প্রথম স্ত্রীর পিতাকে ধোপাদী নতুন বাজারে মারপিট করে আহত করেন। তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে প্রতারক বুলবুলের পিতা ইয়াকুব আলী শেখ বলেন, যৌতুক বাবদ ২ লাখ টাকা নেয়া হয়নি, ৭৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র বউমা জামিলা বেগম সব এনেছে। তিনি বলেন, আমার ছেলে তাকে না রাখলে আমি কি করবো? আমার কিছুই করার নেই।
বুলবুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) একেএম শামীম হাসান বলেন, বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।