Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে দুবাই প্রবাসী যুবককে কুপিয়ে হত্যা

0

প্রতিবেদক :
যশোরে দুবাই প্রবাসী এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যারাতে যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া-মঠবাড়ি গ্রামের মাঝে বুকভরা বাওড়ের পাশে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত দুবাই প্রবাসী সোহেল রানা (৩৮) সদর উপজেলার হালসা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ।

নিহত সোহেল রানার স্বজনেরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে আনার জন্য সোহেল মোটরসাইকেলে ভাইপো জিসানকে শ্বশুরবাড়ি আলমনগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে চান্দুটিয়া-মঠবাড়ি গ্রামের মাঝে বুকভরা বাওড়ের পাশে পৌঁছানো মাত্র ফারাবির নেতৃত্বে ৪-৫ জন তার পথরোধ করে। এরপর তারা সোহেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎক মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের ছোটভাই শাকিল আহমেদ জানান, যশোর সদর উপজেলার আলমনগর গ্রামের আলিম হোসেনের মেয়ে খুশির সঙ্গে প্রায় চার বছর আগে সোহেলের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে দেড়বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। সোহেল বউকে শ্বশুরবাড়ি রেখে দীর্ঘদিন দুবাইয়ে ছিলেন। মাস দুয়েক হলো তিনি বাড়িতে ফিরেছেন।

দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার সময়ে ভাবি খুশির সঙ্গে তার বাবার বাড়ি এলাকা আলমনগর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে ফারাবির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিনের এই প্রেমের মেলামেশায় বাধা হয়ে দাঁড়ান দুবাই ফেরত স্বামী সোহেল। তাই সোহেলকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলাতে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ভাবী খুশি ও তার প্রমিক ফারাবী। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বুধবার বিকালে ভাবি ভাই সোহেলকে তার বাবার বাড়িতে আসতে বলে। মোটরসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে চান্দুটিয়া-মঠবাড়ি গ্রামের মাঝে বুকভরা বাওড়ের পাশে পৌঁছালে ফারাবী তাকে গতিরোধ করে এলোপাতালি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকবাসী তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারের হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এদিকে হাসপাতালে দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে আহাজারি করতে দেখা যায় স্ত্রী খুশি আক্তারকে। পাশেই নির্বাক চাহনিতে খালার কোলে বসেছিল দেড়বছর বয়সি মাহির রানা। সবার চোখে জল গড়ালেও শিশু মাহির বুঝে উঠতে পারেনি তারা বাবা আর এই পৃথিবীতে নেই। আহাজারি করতে করতে সোহেল রানার স্ত্রী খুশি মীম বলেছেন, তার স্বামী বিদেশে থাকাকালীন ফারাবি তাকে পছন্দ করতো। রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়েছে। কিছুদিন আগে ফারাবি সোহেলকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলেছে সে বাড়িতে এলে তাকে খুন করা হবে। চারদিন আগে সোহেল স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ি যান। সেখানে মীমকে রেখে আসেন। বুধবার বিকেলে ফোন করে সোহেল মীমকে বলেছে, তুমি রেডি হও আমি এসে তোমাকে নিয়ে আসবো। কিন্তু পথিমধ্যে ফারাবির নেতৃত্বে সোহেলকে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে। মীম তার স্বামীর হত্যাকারী ফারাবির ফাঁসি দাবি করেন।

অপরদিকে মীমের পিতা আব্দুল আলিম বলেছেন, তিনি ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। দীর্ঘদিন পর জামাই সোহেল দুবাই থেকে দেশে এসেছে। চারদিন আগে তার মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসেছিল। বুধবার সন্ধ্যায় সোহেল তার বাড়িতে যাওয়ার পরে হত্যার শিকার হয়েছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) বেলাল হোসাইন বলেছেন, স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে সোহেল রানা খুন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান চলছে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.