যশোর বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় ১৪ হাজার
ঝিনাইদহ ও নড়াইল কারাগারের দুই হাজতি পরীক্ষা দিচ্ছে
প্রতিবেদক :
বাংলা প্রথম পত্রের মধ্য দিয়ে সোমবার (৩০ এপ্রিল) সারাদেশের ন্যায় যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবছর বোর্ডে সর্বমোট ১ লাখ ৫৮ হাজার ১০২ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার কথা রয়েছে। ১০ জেলার ২ হাজার ৫৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসব পরীক্ষার্থী ২৯২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। এদের মধ্যে কারাগারে থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে দুজন। এদের একজন ঝিনাইদহ এবং আরেকজন নড়াইল কারাগারের হাজতি।
এদিকে, দুই বছর পর এবার সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হবে পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশনা দিয়েছে বোর্ড সংশ্লিষ্ঠ।
যশোর বোর্ডে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১০২ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার কথা রয়েছে। গতবছরে ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৩ জন। গতবারের তুলনায় এ বছর মোট পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় ১৪ হাজার। গত দুই বার পাসের হার বেশি হওয়ায় এ বছর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ‘রেকর্ড সংখ্যাক’ কমেছে। আর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমার কারণেই মূলত এ বছর মোট পরীক্ষার্থী কমেছে বলে মনে করছেন বোর্ড সংশ্লিষ্ঠরা। অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৭৮ হাজার ৬৬৯ ও ছাত্রী রয়েছে ৭৯ হাজার ৪৩৩ জন। বিজ্ঞান বিভাগের মোট ৩৯ হাজার ৪৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৯১৭ ও ছাত্রী ১৮ হাজার ৫২০ জন। মানবিক বিভাগের মোট ১ লাখ ৭৬৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার ৭০৩ ও ছাত্রী ৫৩ হাজার ৬২ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের মোট ১৭ হাজার ৯০০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ৪৯ ও ছাত্রী ৭ হাজার ৮৫১ জন রয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্তভাবে আয়োজনের জন্য ২৩ মে পর্যন্ত যশোরের সবধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রালয়। পরীক্ষাচলাকালীন কোনো কোচিং সেন্টার খোলা থাকলে কোচিং সংশ্লিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।
বোর্ডতথ্যানুযায়ী, ‘এবারও সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হবে পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দিলে সেই পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি তথ্য একটি রেজিস্ট্রারে লিখে রাখতে হবে। পরীক্ষার দিনই সেসব তথ্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে হবে। নিয়মানুযায়ী, ট্রেজারি বা থানা থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হবে। তারপর পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে খুদে বার্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে কোন সেটে সেদিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তা (কোড জানানো হয়) জানিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্র সচিব ছাড়া আর কেউ মুঠোফোন কিংবা ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবও ছবি তোলা যায় না, এমন একটি সাধারণ মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবিব বলেন, গত বছর যশোর বোর্ডে এসএসসিতে দেশ সেরা রেজাল্ট করেছিল। এর আগের বছরে করোনার কারণে অটোপাশ থাকায় কোনো ফেলের শিক্ষার্থী ছিল না। ফলে যশোর বোর্ডে যেখানে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী থাকে ১৫ হাজারের বেশি; সেখানে সবমিলিয়ে বলা যায়, অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমার কারণেই মূলত এ বছর মোট পরীক্ষার্থী কমেছে। তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্নে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র সচিবদের সঙ্গে একাধিকবার মিটিং করেছি। গতবার একাধিক কেন্দ্রে এক বিষয়ের প্রশ্ন অন্য বিষয়ের প্রশ্ন দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে গভীরভাবে সর্তক রয়েছি।