যশোরে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড
৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিটে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
প্রতিবেদক :
চলতি মৌসুমে যশোরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার (৩ মে) দুপুরের পর থেকে বিকাল পর্যন্ত ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতে জেলার অনেক উপজেলায় মাঠে কেটে রাখা ধান ভাসছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, ‘টানা চার ঘন্টার এ বৃষ্টিতে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ধানের বিছালি পচে যাওয়াসহ উজ্জলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ আকাশে কালো মেঘ চেপে বসে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রকৃতিতে সন্ধ্যা নেমে আসে। পুরো আকাশে বজ্র আওয়াজ শুরু হয়। এরপর ১২টা ২০ মিনিট থেকে আকাশ থেকে ঝিরঝির আকারে বৃষ্টি শুরু হয়। পরে তা মুষলধারে নেমে আসে আকাশ থেকে। মুষলধারার এ বৃষ্টিপাত মূলত চলে দুপুর ২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এসময় শহরের রাস্তাঘাট, অলিগলি ফাঁকা হয়ে যায়। মানুষ ও যানবাহনের চলাচলও কমে যায় বৃষ্টির কারণে। এরপর মাত্র আধা ঘন্টা বিরতি দেয়ার পর বৃষ্টি আবার শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। বেলা ১২টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত এই ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিটে মোট ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে।
![](https://kapotakkho.com/wp-content/uploads/2023/05/dainikkapotakkho_03.5.23_weather_2.jpg)
তবে বৃষ্টিপাত হলেও এসময় বাতাসের গতিবেগ কম থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে। যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা একটানা না হয়ে বিরতি দিয়ে হবে বলে সূত্রটি জানায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, যশোরে এই মূহুর্তে প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমির ধান রয়েছে কাটার অপেক্ষায়। বাকি ১ লক্ষ হেক্টর জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষক। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন বিরতি দিয়ে বৃষ্টি হলেও পরক্ষণে রোদ ওঠার কারণে কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। তবে বুধবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, কিছু এলাকায় কৃষক বিছালীর জন্য ধান কেটে ক্ষেতে ফেলে রেখেছেন শুকানোর জন্য। বৃষ্টিতে এসব ধান ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর যেসব ধান এখনও কাটা হয়নি, সেসব ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবেনা। তবে কী পরিমাণ ধানের ক্ষতি হয়েছে তা এই মূহুর্তে বলা কঠিন বলে তিনি জানান।
সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকার কৃষক তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করে আড়াই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল। ঝড়ে পাকা ধান প্রায় সব পড়ে গেছে। এ অবস্থায় সামনে কীভাবে ফসল ঘরে তুলব, সেই দুশ্চিন্তায় আছি।’