জন্মদিনে স্মরণ : আলেকজান্ডার পুশকিন
বাবলু ভট্টাচার্য :
ইংরেজি সাহিত্যে যেমন শেক্সপিয়ার, জার্মান সাহিত্যে গোয়েটে, বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ, তেমনি রুশ সাহিত্যে আলেকজান্ডার সের্গেইয়েভিচ পুশকিন এর রাজত্ব। মাত্র ৩৮ বছরের জীবনকালে তিনি খ্যাতির চূড়ায় আরোহণ করেন। তাকে অভিহিত করা হয় আধুনিক রুশসাহিত্যের জনক হিসেবে।
আশ্চর্য দখল ও দক্ষতা ছিল তার ভাষার ওপর। অগ্রজ সাহিত্যিকদের প্রতিষ্ঠিত ভাষারীতির অনুসরণ না করে স্বকীয় ভাষারীতির নির্মাণ করেন তিনি। যার বৈশিষ্ট্য গতিময়তা ও আধুনিকতা। ফলে ভাষা প্রাঞ্জলতা ও গভীরতা লাভ করে। তিনি কবি, কিন্তু উপন্যাস রচনায় হাত দিয়েও তিনি সার্থক। তার রচিত উপন্যাস ‘ইয়েভেজোন ওনেজিন’- রুশ কথা সাহিত্যের মাইলস্টোন হিসেবে খ্যাত।
পুশকিনের পরিবার ছিল ৬০০ বছরের পুরনো রুশ প্রাচীন অভিজাত পরিবারগুলোর একটি। বাবা লভোভিচ পুশকিন শখ করে কবিতা লিখতেন। তার বিরাট লাইব্রেরি ছিল। বাবার সান্নিধ্য এবং বইয়ের আবহে বেড়ে ওঠেন পুশকিন। আবার বাড়িতে তার বাবা সাহিত্য রসিক বন্ধুদের নিয়ে বসাতেন সাহিত্যের আড্ডা। এ সাহিত্য অনুকূল পরিবেশে তিনি বেড়ে ওঠেন।
১৫ বছর বয়সেই ১৮১৪ সালে পুশকিনের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ‘Messenger of Europe’- নামে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৮১৪ সালে। তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘Ruslam lyudman’। ১৮২০ সালে রুসলান ই লুদমিনা নামে কাহিনীকাব্য প্রকাশিত হলে তাকে উদীয়মান কবি হিসেবে ধরে নেন অনেকে।
রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে পুশকিনেকে বন্দি করা হয়। সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয় দক্ষিণ রাশিয়ার একটি দুর্গম অঞ্চলে। প্রথম নিকোলাস ১৮২৫ সালে রাশিয়ার জার হিসেবে সিংহাসন আরোহণ করেন। তিনি ছিলেন পুশকিনের কবিতার ভক্ত। তার কৃপায় ১৮২৬ সালে পুশকিনের বন্দি ও নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটে।
১৮৩৭ সালে কিছু ব্যক্তিগত শত্রুর সঙ্গে সামনাসামনি সংঘর্ষে তিনি আহত হন এবং দুদিন পরে ১০ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৭ সালে মারা যান।
আলেকজান্ডার (সের্গেইয়েভিচ) পুশকিন ১৭৯৯ সালের আজকের দিনে (৮ জুন) মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন।
লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব