চৌগাছার শ্মশানের মাটি কেটে ডিভাইনের কোল্ড স্টোরেজ!
প্রতিবেদক :
যশোরের চৌগাছার কংশারীপুর মহাশ্মশানের মাটি কেটে ডিভাইন গ্রুপের কোল্ড স্টোরেজের নিচু জায়গা ভরাট করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মহাশ্মশানের সমাধি ও চিতা এবং ৫০টির বেশি কঙ্কালসহ মাটি নিয়ে নিয়েছে ডিভাইন গ্রুপ। এতে মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে। শ্মশান থেকে মাটি কাটায় সেখানে পুকুরের মতো গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতের আঁধারে জেটি কল দিয়ে কংশারীপুর মহাশ্মশানের নিজস্ব জায়গা থেকে মাটি কাটা হয়। ওই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয় ডিভাইন গ্রুপের কোল্ড স্টোরেজের নিচু জায়গা। মাটির সাথে মহাশ্মশানের সমাধি ও চিতা এবং ৫০টির বেশি কঙ্কাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। কংশারীপুর, তাননিবাস ও টেংগুরপুর গ্রামের মৃতদেহের সৎকারের জন্য মহাশ্মশানটি ব্যবহার হয়।
শনিবার টেংগুরপুরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হলে সমাধি দেওয়ার জন্য জায়গা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী শনিবার সকালে বৃদ্ধার লাশ নিয়ে মিছিল বের করে। মিছিলটি চৌগাছা ভাস্কর্য মোড়ে পৌঁছানোর পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা মিছিলকারীদের মহাশ্মশানের মাটি তিনদিনের মধ্যে ভরাট করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।
রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রতন আচার্য, কোষাধ্যক্ষ শুভাশিস ভট্টাচার্য, প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত সরকার, গণসংযোগ সম্পাদক উৎপল ঘোষ, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়, আইন বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক শ্যামল দত্ত প্রমুখ। এ সময় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সুধিজনেরা উপস্থিত ছিলেন। পরে নেতৃবন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান ড. মোস্তানিচুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানার সাথে সাক্ষাত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
শশ্মানের মাটি কাটার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন বলেন, শুধু কংশারীপুর মহাশ্মশান নয়, আশেপাশের গ্রামের আরও কয়েকটি শশ্মান জবরদখল হচ্ছে। তার মধ্যে কংশারীপুরের ঘটনা ভয়াবহ। আমরা সেখানকার প্রশাসনের সাথে দেখা করে ৪ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এব্যাপারে ডিভাইন গ্রুপের ম্যানেজার সাগর রহমান মোবাইলে বলেন, আমরা মাটি কাটি না মাটি কিনি। মাটিকুমড়ির রানা আমাদের কাছে ওই মাটি বিক্রি করেছেন। শশ্মানের চিতার মাটি কাটার পর কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দেন।