যশোরে প্রস্তুত ১১ সাইক্লোন শেল্টার
প্রতিবেদক :
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় যশোর জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং থেকে মানুষকে রক্ষায় যশোরে ১১টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একইসাথে প্রস্তুত থাকছে পাঁচটি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও একটি মুজিব কেল্লা। পাশাপাশি জেলার ১২৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৩৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ খুলে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৪ হাজার ৮শ’ মানুষ থাকতে পারবে।
এছাড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, প্রস্তুত করা হয়েছে জরুরি চিকিৎসকদল ও
অ্যাম্বুলেন্স। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঔষধ মজুদ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান।
এদিকে, যশোর বিমানবন্দর আওবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বিমানবন্দরে যাত্রী ও কার্গ বিমান স্বাভাবিক ভাবে ওঠা নামা করছে বলে জানান বিমানবন্দর ম্যানেজার রেজাউল ইসলাম মাসুদ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান বলেন, অভয়নগর উপজেলায় ২টি, কেশবপুরে ৫টি, শার্শায় ১টি, মণিরামপুরে ৩টিসহ মোট ১১টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও ৫টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ১২৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৩৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যশোর সকল স্বেচ্ছাসেবি, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
যশোর সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানিয়েছেন, জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেট টিম গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ঔষধ মজুদ করা হয়েছে এবং অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে লোকজন যাতে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য জেলার প্রাথমিক স্তরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিকেলে জরুরিভাবে জুম মিটিং করেছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোলরুমের ০২৪৭৭৭-৬২৫৮৯ টেলিফোন ও ০১৭০০-৭১৬৭১৩ মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে। মাইকিং করা হয়েছে ইউনিয়নে ইউনিয়নে। মাইকিংয়ে কাঁচা, আধা পাকা ও টিনশেড বাড়ির লোকজনকে পাশের পাকা বাড়ি অথবা সাইক্লোন শেল্টারে যেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্কুল এবং কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ফিরোজ আহমেদ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, যশোরের বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের জন্য ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একইসাথে স্থানীয় খাদ্য গুদামগুলো খুলে রাখা হবে। যাতে জরুরি প্রয়োজনে কাজে লাগানো যায়।