রাত থেকে নিখোঁজ, সকালে রেলস্টেশনে মিলল ঝুলন্ত মরদেহ
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে রেহেনা খাতুন নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ মিলল স্থানীয় রেলস্টেশনের বাউন্ডারি রেলিংয়ে। রোববার সকাল ৭টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে জিআরপি পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য এই মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। নিখোঁজের ১১ ঘণ্টা পর তাঁরা মরদেহ উদ্ধারের খবর জানতে পারেন। রেহেনা খাতুন কোটচাঁদপুর পৌরসভার রুদ্রপুর গ্রামের বিশারত আলীর স্ত্রী। স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক কলহের কারণে হয়তো আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকে রেহেনা খাতুনকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর থেকে তাঁর স্বামী বিশারত আলী বিভিন্ন জায়গায় তাঁর খোঁজ করেন। তবে রাতে তাঁর কোনো সন্ধান করতে পারেননি তিনি। আজ সকাল ৭টার দিকে তিনি জানতে পারেন রেলস্টেশনে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা। পরে সেখানে গিয়ে তিনি স্ত্রীর মরদেহ শনাক্ত করেন।
এ নিয়ে রেহেনা খাতুনের মা রেবেকা খাতুন বলেন, ‘২০ বছর আগে রেহেনাকে বিশারত আলীর সঙ্গে বিয়ে দিই। সংসারে তাঁদের দুটি ছেলে-মেয়েও আছে। গতকাল রাতে জামাই ফোন করে জিজ্ঞাসা করছিল, রেহেনা আমাদের বাড়িতে এসেছে কি না। রাত থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর থেকে সব আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজ করি। আজ সকালে জামাই আবারও ফোন করে বলেন রেহেনাকে পাওয়া গেছে। ভালো আছে তাড়াতাড়ি চলে আসেন। এরপর এসে দেখতে পাই আমার মেয়ের লাশ রেলের রেলিংয়ে ঝুলছে।’
রেহেনা খাতুনের ছলে পলাশ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি নানিবাড়িতে থাকি। রাতে জানতে পারলাম মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমি ঘুমিয়ে পড়ি। শনিবার সকাল ৭টার দিকে জানতে পারি, একটা মরদেহ কোটচাঁদপুর রেলস্টেশনের বাউন্ডারির রেলিংয়ে ঝুলছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখি মরদেহটি আমার মায়ের।’
এমন মৃত্যুর কারণ নিয়ে জানতে চাইলে পলাশ আরও বলেন, ‘আমি নানিবাড়িতেই থাকি। আব্বা আম্মুর সঙ্গে কী ঘটেছিল আমি জানি না।’
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ মো. আজিজ বলেন, ‘আজ ভোরে আমাদের কাছে কল আসে ৯৯৯ থেকে। জানতে পারি মৃত্যুর ঘটনাটি। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই রেলস্টেশনের বাউন্ডারির রেলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে মরদেহটি। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রেলের কর্মকর্তাদের জানিয়ে চলে আসি। কারণ এটি জিআরপি পুলিশের দায়িত্ব। ওই মরদেহ আমরা উদ্ধার করতে পারি না।’ যশোর জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) অসিম কুমার দাস বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য যশোরে নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’ প্রাথমিক তদন্তে কী পেলেন—এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’