নওয়াপাড়ায় নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু
মজুরি বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি
শাহিন হোসেন, অভয়নগর :
নৌ-যান শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে আজ রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে দেশব্যাপি কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ। এতে নওয়াপাড়া নদীবন্দরে লোড-আনলোড বন্ধ হয়ে গেছে। অচল হয়ে পড়ছে বন্দরের কার্যক্রম। কয়লার ভরা মৌসুমে অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে : নৌযান শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকায় উন্নীতকরন, দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ, কন্টিবিউটরি প্রফিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদান, বাল্কহেডের রাত্রিকালীন চলাচলের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ, পরিবহণ নীতিমালা শতভাগ কার্যকরকরণ, চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল ও চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধসহ ১০ দফা।
এদিকে ভরা মৌসুমে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। তারা আশংকা করছেন, চলমান কয়লা ও সারের মৌসুমে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা না হলে অচল হয়ে পড়বে নওয়াপাড়া নদীবন্দর। বন্ধ হয়ে যাবে লোড-আনলোডের কাজ। কর্মহীন হয়ে পড়বে হাজার হাজার শ্রমিক। বন্দর ব্যবহারকারি ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। হ্যান্ডলিং শ্রমিক সাগর আহমেদ, হাসান মোল্যা, রুম্মান মোল্যা, ওসমান বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিনের মতো আজ কাজে এসে দেখি জাহাজের লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কবে যে কাজ হবে তা বলতে পারছি না। কাজ না হলে না খেয়ে মরতে হবে।
নওয়াপাড়া পৌর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফালগুন মন্ডল বলেন, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে বন্দর এলাকায় লোড-আনলোডের কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে ১৭ হাজার হ্যান্ডলিং শ্রমিককে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। সেইসাথে তাদের প্রতিদিনকার উপার্জনও বন্ধ হয়ে গেছে।
নওয়াপাড়া সার-সিমেন্ট, খাদ্যশস্য ও কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহজালাল হোসেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্রান্তিলগ্নে ব্যবসায়ীরা এমনিতেই নাজুক অবস্থায় পড়েছেন। তার উপর এই ভরা মৌসুমে শ্রমিক কর্মবিরতির ফলে নওয়াপাড়ার ব্যবসা-বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ব্যবসায়ীরা। তিনি কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান।