প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
অভয়নগর সিদ্ধিপাশা ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
অভয়নগর প্রতিনিধি :
অভয়নগরের সিদ্ধিপাশা ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক, পরিছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের বাণিজ্য করা হয়েছে বলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবক সদস্যরা লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ৪টি পদে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান গোপনে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এ নিয়োগ দিয়েছেন। অভিভাবক সদস্য দেবব্রত ভদ্র, পিয়ারি, জাকির ফারাজী ও আবের আলী শেখ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ব্যানবেইসের পরিচালক, দুদক খুলনার পরিচালক, দুদক যশোরের উপপরিচালক, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ওই নিয়োগ বন্ধ করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে না জানিয়ে অফিস সহায়ক, পরিছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদের জন্য গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা বা কোনোকিছু না জানিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ কমিটি গঠন ও নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণসহ নিয়োগ ও যোগদানপত্র দিয়ে যোগদান করানো হয়। এতে মোটা অংকের বিনিময়ে আইন বহির্ভুতভাবে নিজের ইচ্ছেমত সভাপতির আপন বোন ও আত্মীয়দের এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রেজুলেশনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নেই। প্রধান শিক্ষক জাল স্বাক্ষর করে এই কাজ পরিচালিত করেছেন। তিনি স্বার্থসিদ্ধি ও বিদ্যালয়ের আর্থআত্মসাৎ ও ভুয়া ভাউচারসহ নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এ কার্য সাধন করেন। সেজন্য গত অক্টোবর মাসে রাতেরবেলা ঐ চারটি পদে বিদ্যালয়ে নামমাত্র নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এরপর ওই চার প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের যোগদানপত্র দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে অভিভাবক সদস্য দেবব্রত ভদ্র, পিয়ারী, জাকির ফারাজী, আবের আলী শেখ জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক অফিস সহায়ক পদে সুফিয়া খাতুনকে সনদ বানিয়ে নিয়োগ প্রদান করেছেন। সভাপতি জিয়া মোল্যার স্ত্রী শারমিন বেগম তার বোন সুফিয়া খাতুনের লিখিত পরীক্ষাটি করে দেন। খাতা চেক করলে হাতের লেখায় প্রমাণ পাওয়া যাবে। আয়া পদে সোনালী দাসের শিক্ষাগত যোগ্যতা জাতীয় পরিচয়পত্রের মায়ের নাম ও জন্ম তারিখ মিল না থাকার সত্বেও যাচাই বাছাইয়ে বাদ দেওয়া হয়নি। তাকেও এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের ব্যানবেইস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর ৯৬২৫। অথচ তিনি বেতন তোলেন ৯৬২৮ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে, যা অবৈধ। প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ। তার বিরুদ্ধে ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে মন্ত্রণালয়ের অডিটে আপত্তি দেওয়া হয়। ওই সময় প্রধান শিক্ষক তার নিয়োগে তিনি জাল স্বাক্ষর ও সিল তৈরি করেন। যা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। এখনও তার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট আপত্তি আছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জিয়া মোল্যার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি (০১৯৫৯৮০৯০৫১) বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বোনকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে থেকে নিয়োগ পেতে চেয়েছিল। তাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। কোনো সদস্য বা অভিভাবকরা কি মনে করল সেটা তার দেখার বিষয় নয়। যথাযথ নিয়মানুসারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, এই নিয়োগ নিয়ে ডিডি অফিস থেকে কোনো তদন্ত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান আমার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন।