অভয়নগর প্রতিনিধি :
অভয়নগরে বালির ড্যাম্প থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশের পরিচয় মিলেছে। নিহত যুবকের নাম ফরিদ গাজী (১৯)। তিনি উপজেলা পরিষদ এলাকার গুয়াখোলা শাহী বস্তির মৃত আফিল উদ্দীন গাজীর ছেলে। লাশের পরিচয় শনাক্ত করার পর আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করেছে। আসামীরা হলেন : নড়াইল সদর থানার যদুনাথপুর গ্রামের সাখাওয়াত মোল্যার ছেলে শান্ত (২১) ও একই গ্রামের ছবুর মোল্যার ছেলে সাকিব মোল্যা (২১)।
নিহত ফরিদ ও গ্রেফতার হওয়া আসামীরা তিনজন মিলে নওয়াপাড়ার বেঙ্গল মিলের পাশে একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
আসামীদের আটকের পর পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নিহত ফরিদ গাজীর নামে ধর্ষণ মামলা রয়েছে। জেলে থাকাকালিন ওই দুই আসামীর সাথে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনজন একটি রুম ভাড়া নিয়ে নওয়াপাড়া বেঙ্গল মিল এলাকায় বসবাস করতেন। তারা জাহাজের স্কটের কাজ করতেন। এছাড়াও অন্য কাজও করতেন। মাঝে মাঝে ছিচকে চুরি করতেন। ফরিদ ওই দুই বন্ধুর কিছু টাকা আত্মসাত করেন। আসামীরা দুইজন মিলে ঘটনার দিন সন্ধ্যারাতে স্যালো মেশিন চুরির লোভ দেখিয়ে ফরিদকে ভৈরব ব্রিজের কাছে এনে জবাই করে ও গলায় চাকু ঢুকিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যান।
আসামীদের স্বীকারোক্তিতে বাসার পাশ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আসামী আটক করে।
নিহত ফরিদ গাজীর বোন আসমা বেগম জানান, তার ভাই জাহাজে কাজ করতো। কখনও অন্য কাজও করতো। ফরিদ নওয়াপাড়া বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলের পাশে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। ওই বাসায় তার আরও দুই বন্ধু ভাড়া থাকতো। টাকা নিয়ে ওদের মধ্যে বিবাদ ছিল। এ কারণে তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে ওই বন্ধুরা।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর ২টায় স্থানীয় লোকজন ভৈরব ব্রিজের পাশে দক্ষিণ দেয়াপাড়া গ্রামে মাটিকাটা শ্রমিকরা বালির ডিপোর ওপর গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে বিকালে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রাতে লাশের আঙ্গুলের ছাপ শনাক্তকরণ করার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে লাশের পকেটে একটি চিরকুটে পাওয়া মোবাইল নং ধরে লাশের পরিচয় শনাক্ত এবং আসামী গ্রেফতার করা হয়।