যশোরে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করে আরও একজনের মৃত্যু
মদ বিক্রেতা বাবুল চিহ্নিত, আটকের চেষ্টা চলছে : ওসি
প্রতিবেদক :
যশোরে নেশাজাতীয় বিষাক্তদ্রব্য পান করে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হলো। শুক্রবার রাতে আবু বক্কর মোল্লার ছেলে আবুল কাশেম (৫৫) ওরফে বাগানে মারা যান। যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে তারা ওই নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করলেও বিষয়টি শুক্রবার জানাজানি হয়। এর আগে মারা যান সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে ইসলাম (৪৫) ও শাহজাহান আলীর ছেলে জাকির হোসেন (২৯)।
অসুস্থ অবস্থায় ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন। তারা হলেন : সিতারামপুর গ্রামের মনিরুদ্দীনের ছেলে বাবলু (২৮) এবং একই গ্রামের আনোয়ার মোড়লের ছেলে রিপন হোসেন মোড়ল (৩৬)। তারা গোপনে ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল ওসি তাজুল ইসলাম জানান, নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে হাসপাতালে তথ্য গোপন করে ভর্তি করাতে তারাও জানতে পারেনি। আমাদের কাছেও আগে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। খবর পাওয়ার পর খোঁজখবর নিয়ে তিনজনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছি। সর্বশেষ মারা যাওয়া আবুল কাশেম ওরফে বাগানের মেয়ে বাদী হয়ে শনিবার মামলা করেছেন। অবৈধ মদ বিক্রেতা বাবুলকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মহিউদ্দিন জানান, এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী অসুস্থ ও মৃতরা অতিরিক্ত বা বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করেছিলেন। কিন্তু তাদের স্বজনরা সেই তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামের একটি মেহগনি ও লিচু বাগানে ঐ পাঁচজন বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করেন। রাতেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজ নিজ বাড়িতে গ্রাম্য চিকিৎসকের চিকিৎসা নেন। অবস্থায় অবনতি হলে ইসলামকে বৃহস্পতিবার ভোরে (২৬ জানুয়ারি) তথ্য গোপন করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মারা যান। এরপর পরিবারের সদস্যরা দ্রæত ছাড়পত্র ছাড়াই মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে চলে যান।
এদিকে, বাকি চারজন বাড়িতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকালে তারা একে একে যশোর হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে জাকির হোসেন দুপুর পৌনে একটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। এরপরই তাদের বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পানের বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনা জানাজানি হলে হাসপাতালে ভর্তি বাবলু ও রিপন হোসেন হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি ক্লিনিকে চলে যান। অপর অসুস্থ আবুল কাশেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
যশোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, স্বজনরা তথ্য গোপন করে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে রোগীদের মুখে গন্ধ থেকে বোঝা যায় অতিরিক্ত বা বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পানের ফলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।