মেহেরপুর সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব
মেহেরপুর প্রতিনিধি :
পৌষ-মাঘের নরম রোদমাখা দিনগুলি কদিন পরই বিদায় নেবে। ফুল পাখি প্রজাপতি আর সবুজ পাতার বুকে জেগে উঠবে নতুন ছন্দ। নতুন স্বপ্ন। শীতের দুপুরে, ঝিরঝিরে হাওয়ায় আমাদের বাঙালি মনটা ‘অকারণ পুলকে’ আমলকির ডালের মতো নেচে ওঠে, কেঁপে ওঠে। ফসল কাটার দিনগুলোকে ঘোরলাগা স্বপ্নময় দিন মনে হয়। সত্যিই, শীত এলে কেমন যেন আনন্দ জেগে ওঠে। নবান্নের পিঠার সুঘ্রাণে ভরে ওঠে গ্রাম-লোকালয়। এবার পৌষ-মাঘে বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দান পলিটিক্যাল পার্টির থিসিস, কাউন্টার-থিসিসে খেজুর রসের গরম তাওয়ার মতোই উত্তপ্ত ও উপভোগ্য ছিল। শীতের সন্ধ্যা নামতে না নামতেই চলে আগুনের তাপে হাত সেঁকার কাজ। চলে পিঠাপুলি বানানোর ধুম। রসের পিঠা, দুধচিতই, সেমাই পিঠা, ভাপা পুলি পিঠা, ফুলঝুরি পিঠা। বলা নিষ্প্রয়োজন যে, পিঠা এক নিটোল শিল্পকর্ম। তারই প্রমাণ মিলল মেহেরপুর সরকারি কলেজ প্রতিবারের মতো পিঠা উৎসবে।
ফাস্টফুডে অভ্যস্ত নতুন প্রজন্মকে দেশি খাবার ও মাটিলগ্ন সংস্কৃতির প্রতি বিশ্বস্ত করে তুলতে এবারও আজ রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপি পিঠা উৎসবের আয়োজন করে মেহেরপুর সরকারি কলেজ। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে স্টলে স্টলে প্রতিটা পিঠার স্বাদ উপভোগ করেন। মুগ্ধ হন নতুন প্রজন্মকে হারিয়ে যাওয়া পিঠার স্বাদ ফিরিয়ে দেয়া ও পরিচিত করার জন্য।
কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিঠা উৎসবে ২৫টি স্টল দেন। সেসব স্টলে হরেকরকম পিঠা প্রদর্শন করা হয়। শহরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ মানুষে কলেজ চত্বর মুখর হয়ে ওঠে।
পিঠা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বাংলার মেয়েরা, মায়েরা যে জাত শিল্পী তা হরেকরকম পিঠার পরিপাট্য ও পরিবেশনাতে পরিস্ফূট হচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আর কফি শপ নয়, শহরের মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠুক পিঠাঘর।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিউল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, পুলিশ সুপার রাফিউল আলম, সহযোগি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন প্রমুখ।