ঝিকরগাছা পৌর মেয়রকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ
উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
প্রতিবেদক :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা পৌরসভায় মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের অফিস কক্ষে ঢুকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। দলীয় কার্যালয়ের নামে ভাঙিয়ে সরকারি জমি দখলের বিষয়ে আপত্তি তোলায় তাকে এই হুমকি দেয়া হয়েছে বলে আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। তবে উল্টো মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের বিরুদ্ধে থানায় হত্যার হুমকির অভিযোগ দিয়েছেন মুছা মাহমুদ। উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই দুই নেতার পারস্পরিক অভিযোগে প্রকাশ্যে এলো অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, গত ১৫ মার্চ বেলা পৌনে ১২টার দিকে পৌরসভার কার্যালয়ে তিনি কাজ করছিলেন। এসময় আমার অফিস কক্ষে ঢোকেন ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ। তিনি সেবা গ্রহণে আসা সাধারণ মানুষকে কক্ষ থেকে বের করে দেন। একপর্যায়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাইরে বের হলে আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের কথাবার্তাও বন্ধ। কারণ সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে দল আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিলেও মুছা মাহমুদ ও তার লোকজন বিপক্ষে নির্বাচন করেন। আমার কক্ষে ঢোকার সময় মুছা মাহমুদ তার অস্ত্রধারী ৭-৮ জন ক্যাডারকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে। এ বিষয়ে পৌর পরিষদের প্যাডে ঝিকরগাছা থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করি। কিন্তু সেই মামলা রেকর্ড করেনি থানা পুলিশ। এ বিষয়ে ওসি সাহেবকে ফোন করলে তিনি উপরের নির্দেশের অপেক্ষা দেখান। আপনাদের কাছে প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের পদ থাকলেই কি সে আইনের উর্ধ্বে ? আমি নিজেও ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে মুছা মাহমুদের অতীতের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিবরণীও তুলে ধরা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর মৌজায় সাবেক রানী ফার্মেসি ৫ শতক সরকারি জমিতে আওয়ামী লীগের অফিস করার নামে অবৈধভাবে দখল করেছে মুছা মাহমুদ ও তার সহযোগিরা। উপজেলা প্রশাসন সেখানে তালা মেরে রাখলেও সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি দেখে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি। আমি কেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালাম, এজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন মুছা মাহমুদ।
অভিযোগের বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ দাবি করেছেন, ঐ সম্পত্তি জাভেদ নামে এক ব্যক্তির। দলীয় কার্যালয় করার জন্য জমিটি তার কাছ থেকে কেনা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ঐ জমিতে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। দীর্ঘদিন অফিসটি বন্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের লক্ষ্যে ঐ ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছিল। সেটা নিয়েই পৌর মেয়র জলঘোলা করার চেষ্টা করেন। আমি তার প্রতিবাদ করেছি মাত্র। তাকে গালিগালাজ বা হুমকি-ধমকি দিইনি। উল্টো তিনি আমাকে পিস্তল দেখিয়ে শাসিয়েছেন। আর এখন মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত সাংবাদিকদের জানান, দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।