যশোরে জমে উঠেছে ইফতার বাজার
প্রতিবেদক :
রমজানের প্রথমদিনেই যশোরের ইফতার বাজার জমে উঠেছে। খাবারের স্থায়ী হোটেল রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি অস্থায়ীভাবেও ইফতারের সব মুখরোচক সব খাবার বিক্রি হয়েছে। প্রথম রমজান এবং জুমার ছুটির দিন থাকায় ইফতারের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ইফতারসামগ্রির দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শহরের প্রানকেন্দ্র দড়াটানা, জেনারেল হাসপাতালের সামনে, মুজিব সড়ক, রবীন্দ্রনাথ সড়ক, বড়বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, সিভিল কোর্ট মোড়, ঘোপ সেন্ট্রাল রোড, চিত্রা মোড়, মনিহার চত্বরসহ জনবহুল সব পাড়া মহল্লায় খাবার হোটেল ও ও অস্থায়ী বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায় ইফতারের নানা পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ভোজনরসিক ক্রেতাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। এসব দোকানে ইফতারের নিয়মিত আইটেম আলুর চপ, ডিম চপ, বেগুনি, পেঁয়াজুর পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে হালিম, চিকেনফ্রাই, বিরিয়ানি, পাকুড়া, ফুলুড়ি, জিলাপি ইত্যাদি। তবে গতবছরের চেয়ে দাম বেশি হলেও চাহিদাও অনেক।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চাপ, পাকুড়া ৫ থেকে ১০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বড় ডিম চপ ২৫ টাকা, জিলাপি প্রতিটি ১৫ টাকা, সমুচা ১০ টাকা, অনথন ১৫ টাকা, শামি কাবাব ৪০ টাকা, চিকেন রোল ৪০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সামগ্রির মধ্যে জিলাপি প্রকারভেদে দেড়শো থেকে পাঁচশো টাকা কেজি, হালিম একশো থেকে চারশো টাকা, চিকেন ও মাটন সাচলিক ৫০, ফিস কাকলেট ৪০, মাটন কাকলেট ৩০, চিকেন বার্বিকিউ ৮০, চিকেন ক্রিসপি ৫০, চিংড়ি রোল ৩০, চিকেন বল ৪০।
হাসপাতাল মোড়ে ইফতারসামগ্রি কিনতে আসা রনি হোসেন আব্দুর রহিম ও সুখজান বিবিসহ বেশ কয়েকজন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ইফতারসামগ্রির দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অনেকেই তাদের পছন্দনীয় ইফতার ক্রয় করতে পারছেন না। শহরের কাঠেরপুল ব্র্রিজ এলাকায় অস্থায়ী দোকানি শরিফুল জানান, বছরের এই মাসটার জন্যে অপেক্ষা করি। কখনও ফল, কখনও শীতের পিঠার দোকান দিলেও এই সময়ে ইফতারের দোকানে ভালো বেচাকেনা হয়। তিনি জানান, এবার তেল, বেসনের দাম বেশি হলেও বিক্রি কম হবেনা। ডবিøউ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, সম্প্রতি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে ইফতারের দামেও। বেশি দামের ইফতার চলছে খুব কম। আলুর চপ, ছোলা বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, বুন্দিয়ার চাহিদাই বেশি। কাঁচামালের দাম বাড়ায় রেশমি জিলাপির দামও গতবারের তুলনায় বাড়াতে হয়েছে।
এছাড়া, রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হতে দেখা যায় কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, আপেল, আঙ্গুর, লেবু, শশা, ধনিয়াপাতা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের খেজুর। ইফতারে খেজুর ও ফলের চাহিদা বেশি থাকায় এসব দোকানে বেশি ভিড় দেখা যায়। রোজার প্রথমদিনে ফলের প্রতিও মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তরমুজ, মালটা, কলা, আপেলের চাহিদা ছিল বেশি। আপেল, মালটার দাম অন্যান্য সময়ের মতো থাকলেও তরমুজ এবং কলার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। ছোট আকৃতির তরমুজ কিনতে লাগছে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা। বড় আকৃতির তরমুজের দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচশ-ছয়শ টাকা। পালবাড়ি এলাকায় ফল বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, সারাদিন রোদ থাকায় তরমুজ, বাঙ্গির বিক্রি ভালো হচ্ছে। তবে তরমুজের দাম কিছুটা বেশি। কারণ মাত্রই তরমুজের সিজন শুরু হয়েছে। ফলে তার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর দামও কমে আসবে। তাছাড়া অন্যান্য ফলের দাম আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।