যশোর এম এম কলেজের ছাত্রীহলে মধ্যরাতে উত্যক্তের অভিযোগ
প্রতিবেদক :
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের দুটি হল পাশাপাশি। একটি মেয়েদের শেখ হাসিনা হল। অপরটি ছেলেদের শহীদ আসাদ হল। গভীররাতে শহীদ আসাদ হলের ছেলেদের কণ্ঠে অশ্রাব্য ভাষায় শেখ হাসিনা হলের মেয়েদের নাম ধরে ডেকে অশ্রাব্য ভাষা গালিগালাজ করা হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা এভাবেই উত্যক্ত করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ বিষয়ে দুইমাস আগে কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। অভিযুক্তদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঘটনাটি দুইমাস আগের হলেও সম্প্রতি তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে তাদের ঘায়েল করতে এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা হলের ছাত্রীদের অভিযোগ, কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নূর ইসলামের নেতৃত্বে বহিরাগত ও অছাত্ররা শহীদ আসাদ হলে থাকে। তারা প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনা হলের মেয়েদের নানাভাবে ইভটিজিং করে। গভীররাতে হলের ছাত্রীদের নাম ধরে ডাকে, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। কয়েক ঘন্টা ধরে চলে এমন উত্যক্ত। হলের প্রধান ফটকের সামনে রাতের বেলায় এসে দাঁড়িয়ে থাকে। সেখানে ধূমপান করে। এছাড়াও আসাদ হলের পাশ দিয়ে মেয়েরা গেলেই তাদের নানা কটূকথা বলে উত্যক্ত করে। এ বিষয়ে গত ৩১ জানুয়ারি অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কলেজ প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়াও গত ২১ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা নূর ইসলামের নেতৃত্বে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় মেয়েটি বাড়িতে ফিরে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নূর ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে অবস্থিত ছেলেদের শহীদ আসাদ হল ও মেয়েদের শেখ হাসিনা হল (নতুন) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার অনুসারীদের দখলে ছিল। হলগুলো যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারীদের দখলে রয়েছে। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে গ্রুপ বদল হয়েছে। আমরা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের গ্রুপ করি। এজন্য রাজনৈতিকভাবে আমাদের ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তিত নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে ছেলেরা হৈচৈ করে কিংবা শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে গান করে। এ বিষয়েও অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছে।
নূর ইসলাম আরও বলেন, অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ সঠিক নয়। কলেজ প্রশাসনের উপস্থিতিতে মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, দুইমাস আগের পুরাতন ঘটনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ওই সময় অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি নিজে শিক্ষক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আসাদ হলে গিয়ে ছেলেদের সতর্ক করেছি। তাদের সতর্ক করার পর আর মেয়েদের উত্যক্ত করেনি। বিষয়টি নিয়মিত মনিটরিং করছি। এছাড়াও ভূগোল বিভাগের একটি মেয়েকে অপহরণে কথা বলা হচ্ছে, সেটিও ঠিক নয়। তাদের পারিবারিক বিষয় ছিল। তারা পারাবিরকভাবে বিষয়টি সমাধান করেছেন।