প্রতিবেদক :
যশোরের শংকরপুর আশ্রম রোডে প্রতিপক্ষের বোমা হামলা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় চিহ্নিত সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব, পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। সন্ত্রাসীদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহত সাত নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন তুহিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার (১৭ মে) রাতে ঢাকায় রেফার করা হয়। বোমায় আহত ট্রাক চালক সোহেল যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় তুহিনের ভাই সাতজনকে অভিযুক্ত করে কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার রাত ৯টার দিকে যশোর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের শংকরপুর আশ্রম রোড মসজিদের পাশের একটি দোকানে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে হামলা চালায়। এরা বেজপাড়া ও ষষ্টিতলাপাড়া থেকে কয়েকটি ইজিবাইকে আসে। এদের প্রত্যেকের হাতে ছিল ধারাল অস্ত্র। সন্ত্রাসীরা স্থানীয় ভাঙড়ি ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের দোকানের সামনে তার ভাই ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন তুহিনকে উদ্দেশ্য করে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এর একটি বিস্ফোরিত হলেও অপরটি বিস্ফোরিত হয়নি। বোমার স্প্লিন্টার আঘাত করে সুহিনের ট্রাকের চালক হোসেলের মুখে। বোমা বিস্ফোরণের পর তুহিন দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা পিছু ধাওয়া করে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। কয়েকটি কোপ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে। দু’একটি তিনি হাত দিয়ে ঠেকান। এতে তার হাতের একটি আঙুল প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটি কোপ তুহিনের হাতের তালুর মাঝ বরাবর লেগে মারাত্মকভাবে কেটে যায়। তুহিনের আত্মচিৎকারে ভাই সুহিন এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেও কোপায়।
এসময় এলাকার সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। আহত তুহিন ও সোহেলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তুহিনকে পঙ্গু হাসপাতাল যশোরে স্থানান্তর করা হলে সেখান থেকে ওই রাতেই তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ভাই দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে তুহিন শংকামুক্ত। তিনি দু’এক দিনের মধ্যে যশোরে ফিরবেন। বৃহস্পতিবার রাতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ট্রাক চালক সোহেলের অপারেশন সম্পন্ন হয়।
এদিকে, থানা ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বোমাবাজি ও হত্যচেষ্টা ঘটনায় বেজপাড়া, শংকরপুর ও ষষ্টিতলাপাড়ার সাতজনকে অভিযুক্ত করে লিখিত এজাহার দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। হামলার ঘটনায় তিনি যাদেরকে অভিযুক্ত করেছেন তারা হলেন রনি, তাজু, মাহফুজ, সবুজ, ইসহাক, রাজ্জাক ও মনিরুল।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, একটি তুচ্ছ ঘটনায় বুধবার বেজপাড়া ও শংকরপুর এলকার দুটি কিশোর গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডা, মহড়া ও পাল্টা মহড়ার ঘটনা ঘটে। এর জের হিসেবে উপরে উল্লেখিত অভিযুক্তরা রাতে বোমা হামলা ও দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার ঘটনা ঘটায়। ওই এলাকায় এখন দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে এবং বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এজন্য পুলিশ, র্যাব, পিবিআই ওই এলাকায় নজরদারি করছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে। টহল ও নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুতই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনায় জড়িতদের আটকের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।