জন্মদিনে স্মরণঃ মিলড্রেড হ্যারিস
বাবলু ভট্টাচার্য : ২০শ শতাব্দীর শুরুর দিকের একজন মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন মিলড্রেড হ্যারিস। তিনি চার্লি চ্যাপলিনের প্রথম স্ত্রী। হ্যারিস ১০ বছর বয়সে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র “দ্য পোস্ট টেলিগ্রাফার” (১৯১২)। তিনি প্রথম সবাক
চলচ্চিত্র “মেলোডি অব লাভ” (১৯২৮) এ অভিনয় করেন। তিনি হলিউডের নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের অন্যতম প্রচারণা এবং পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ছিলেন। হ্যারিসের পিতা হ্যারি হ্যারিস ছিলেন একজন টেলিগ্রাফ পরিচালক এবং মাতা অ্যানা পারসন্স ফুট। হ্যারিস ১০ বছর বয়সে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। ফ্রান্সিস ফোর্ড ও থমাস এইচ ইঞ্চ পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “দ্য পোস্ট টেলিগ্রাফার” (১৯১২) দিয়ে তিনি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি শিশু অভিনেত্রী হিসেবে শিশু অভিনেতা পল উইলিসের বিপরীতে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯১৪ সালে দ্য ওজ ফিল্ম ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি তাকে দ্য ম্যাজিক ক্লোক অব অজ চলচ্চিত্রে ফ্লাফ ও হিজ ম্যাজেস্টি, দ্য স্কেয়ারক্রো অব অজ
চলচ্চিত্রে বাটন-ব্রাইট চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিয়োগ দেয়। ১৯১৬ সালে ১৫ বছর বয়সে তিনি ডি ডবলু গ্রিফিথের মহাকাব্যিক ইনটলারেন্স চলচ্চিত্রে
হারেম কন্যা চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯১৮ সালে মাঝামাঝিতে ১৬ বছর বয়সী হ্যারিসের সাথে অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের সাক্ষাৎ হয়। তারা একে অপরের সাথে কিছুদিন মেলামেশার পর হ্যারিস জানান যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা এবং তার পেটে চ্যাপলিনের সন্তান। কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ১৯১৮ সালের ২৩ অক্টোবর তারা লস অ্যাঞ্জেলেসে বিবাহ করেন। পরে তিনি সত্যিই অন্তঃসত্ত্বা হন। ইতোমধ্যে লুইস বি মেয়ারের সাথে হ্যারিসের চুক্তি ও তার অভিনয় জীবন নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। চ্যাপলিন ভাবতেন হ্যারিস তার বুদ্ধিমত্তার সমতুল্য নন। তাদের সন্তান নরম্যান স্পেন্সার ১৯১৯ সালে জুলাইয়ে মাত্র তিনদিন বয়সে মারা যায়।১৯১৯ সালের শরতে তারা আলাদা হয়ে যান। চ্যাপলিন লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাথলেটিক ক্লাবে চলে যান। হ্যারিস চ্যাপলিনের সাথে দেখা করার চেষ্টা করতেন এবং ভাবতেন এখন সুখী দাম্পত্য জীবন সম্ভব। কিন্তু ১৯২০ সালে তিনি মানসিক অত্যাচারের কারণ দেখিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। চ্যাপলিনও তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার দোষ চাপান এবং
যদিও তিনি হ্যারিসের প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেন নি, আলা নাজিমোভাকে সন্দেহ করা হত। ১৯২০ সালের নভেম্বরে বিবাহ বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় এবং
হ্যারিস মামলার নিষ্পত্তি হিসেবে ১০০,০০০ মার্কিন ডলার ও কিছু সম্পত্তি লাভ করেন। ১৯২৪ সালে হ্যারিস এভারেট টেরেন্স ম্যাকগভার্নকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে ১৯২৯ সালে ২৬ নভেম্বর। হ্যারিস তাকে পরিত্যাগের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করে। এই দম্পতির এক পুত্র এভারেট টেরেন্স ম্যাকগভার্ন জুনিয়র। ১৯৩৪ সালে নর্থ ক্যারোলিনার অ্যাশভিলে হ্যারিস ফুটবলার উইলিয়াম পি ফ্লেকেনস্টাইনকে বিয়ে করেন। হ্যারিস নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর একটি বড় অস্ত্রোপচারের পর ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। মিলড্রেড হ্যারিস ১৯০১ সালের আজকের দিনে (২৯ নভেম্বর) ওইয়োমিংয়ের চেয়েন্নেতে জন্মগ্রহণ করেন।
লেখক: সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব