যশোরে বর্ণিল বিজয় উৎসব উদ্বোধন
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবীত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী
প্রতিবেদক : বর্ণাঢ্য আয়োজনে যশোরে ‘বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটায় টাউনহল ময়দানে জয় বাংলা স্লোগানের মধ্যে দিয়ে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এর আগে ৫০ শিল্পীর কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে যশোরের ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর প্রবাসী বা মুজিবনগর সরকারের প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল যশোরের টাউনহল ময়দানে। দেশের ঐতিহ্যবাহী এ টাউন হল ময়দান ও স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ সংস্কারের জন্যে ইতিমধ্যে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শিগগির সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী বছর এই মাঠে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বৃহৎ আকারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতায় নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার দিকে ধাবিতে হচ্ছে বাংলাদেশ। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনী প্রধান আলী হোসেন মণি।
‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ স্লোগানে আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক উৎসব চলবে।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, জাতীয় সমাজতান্তিক দল-জাসদের কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, যশোর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম খয়রাত হোসেন, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব উদযাপন পর্ষদের চেয়ারম্যান হাবিবা শেফা, সদস্য সচিব সানোয়ার আলম খান দুলু, ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সুকুমার দাস, দিপংকর দাস রতন, হারুনার রশীদ প্রমুখ।
এছাড়া, ৫ ডিসেম্বর ‘মুক্তিযুদ্ধে যশোর রোড’ শিরোনামে আয়োজিত আর্ট ক্যাম্পের ৫০ জন চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবি পাবলিক লাইব্রেরিতে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। বিকেল চারটা থেকে শিশুশিল্পীদের গান ও নৃত্যের মধ্যে দিয়ে সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু হয়। এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সুরবিতান, উৎকর্ষ, স্বরলিপি, শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, সুরনিকেতন, সপ্তসুর ও যশোর শিল্পীগোষ্ঠীর শিশু শিল্পীরা। এরপর কবিতা আবৃত্তি করেন শীলা রানী দাস, কাজী শাহেদ নেওয়াজ ও আব্দুল আফ্ফান ভিক্টর। এছাড়াও সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশগ্রহণ করেন সুরধনী, স্বরলিপি, কিংশুক, স্বরগম, আশাবরী, নন্দন, অগ্নিবীণা, শার্শা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও ঝিকরগাছা সাংস্কৃতিক জোটের বড় শিল্পীরা। রাতে যশোর শিল্পী গোষ্ঠার আয়োজনে নাটক ও সদর উপজেলা বাউলিয়ানাদের অংশগ্রহণে লোক সংগীত উৎসব শুরু হয়।
বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে যশোর জেলা ও উপজেলায় সাংস্কুতিক উৎসবের আয়োজন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন।