বহিষ্কার হচ্ছেন বিতর্কিত যুবলীগ নেতা মাজহার
প্রতিবেদক :
শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহার শোকজের জবাব দিয়েছেন। তবে তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ। আজ বা কাল জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু দলীয় সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাধ্যমে বির্তকিত এই যুবলীগনেতাকে বহিস্কারের বিষয়ে জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে যুবলীগনেতা মাজহারকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছিল।
যশোর জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় যুবলীগনেতা মাজহারকে শুক্রবার শোকজ নোটিশ দেয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি শোকজের জবাব দিয়েছেন। জেলা শাখা জবাবের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন। এরপর যশোর জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর কাছে কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই বার্তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবেন জেলা নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে গত সোমবার যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহার বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে মুঠোফোনে হুমকি দেন। এর কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ৬ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই কথোপকথনের অডিওতে শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের নেতা মাজহারুল বারবার অকথ্য ভাষায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে গালাগালি করছেন। প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশে মাজহারুলকে বলতে শোনা যায়, ২৪ ঘণ্টা পর যদি ওই শিক্ষক যশোরে থাকতে পারেন, তাহলে তিনি চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াবেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগের কমিটির অগোচরে যুবলীগনেতা মাজহার ও তার সহযোগিরা এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে মনিরুজ্জামানকে নিযুক্ত করেন। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা ওই কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাসহ একজন অভিভাবক হাইকোর্টে মামলা করেন। বর্তমানে এই মামলাটি চলমান রয়েছে। এর জের ধরে মাজহার তার ফোন থেকে কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে বলেন। তাকে কমিটির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে জানালে গালিগালাজসহ জীবননাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই জিডিতে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। পরে শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিয়েছে আদালত। গত বুধবার যশোর সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম এ অনুমতি দেন। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য ইছালী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোকাররম হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এছাড়া যশোর সদর উপজেলার আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মাজহারের কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে গণপদত্যাগ করেছেন অভিভাবক সদস্যরা। রোববার দুপুরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনের কাছে এ পদত্যাগপত্র জমা দেন ছয় সদস্য। ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ১০ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির অনুমোদন দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোর।